তেজগাঁও পবিত্র জপমালা রাণী র্গীজায় প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের স্মরণে বিশেষ খ্রিষ্টযাগ অর্পণ

পুন্যপিতা পোপ ফ্রান্সিসের আত্নার চির শান্তি কামনা বিশেষ খ্রিষ্টযাগ অর্পণ

গত ২৭ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,  পুন্যপিতা পোপ ফ্রান্সিসের আত্নার চির শান্তি কামনা করে তেজগাঁও পবিত্র জপমালা রাণীর র্গীজায় গভীর শ্রদ্ধায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ  খ্রিষ্টযাগ।

পবিত্র খ্রিষ্টযাগে  প্রধান পৌরহিত্য করেন ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ বিজয় এন. ডি‘ ক্রুজ। উপস্থিত ছিলেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি‘ রোজারিও, সহকারী  বিশপ সুব্রত বনিফাস গমেজ, অবসর প্রাপ্ত বিশপ থিয়োটোনিয়াস গমেজভাটিকান রাষ্ট্রদূতের সেক্রেটারি  আবেল টাগলো, ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার জয়ন্ত এস. গমেজসহ  অন্যান্য ফাদারগণ।

আর্চবিশপ বিজয় এন. ডি‘ ক্রুজ তার উপদেশ বাণীতে বলেন, “পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন একজন আধ্যাত্নিক, প্রজ্ঞাবান এবং পবিত্র আত্নার আলোকে আলোকিত  দুরদর্শী একজন মানুষ। তার লিখিত বিভিন্ন পত্রের মধ্য দিয়ে পবিত্রাতার জ্ঞান আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন।  তিনি তার প্রজ্ঞার আলোতে বুঝতে পারতেন বর্তমান সময়ে আমাদের জন্য কি প্রয়োজন, জগতের জন্য কি প্রয়োজন।”

এছাড়া ও তিনি আমাদের শিখিয়েছেন আমাদের কথার্বাতায় যেন নম্রতা প্রকাশ পায়। আমরা যেন আমাদের জীবনে নম্রতা, বিনয়ী এবং অন্যকে আমাদের জীবনে স্বাগত জানাতে পারি”, বলেন আর্চবিশপ এন. ডি‘ ক্রুজ ।

আর্চবিশপ আরো বলেন, “বর্তমান সময়ে আমাদের মধ্যে অনেক হতাশা নিরাশা কাজ করছে এ থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের শিখিয়েছেন আমরা যেন আশার তীর্থযাত্রী হয়ে এই জগতকে আশার আলোতে আলোকিত করতে পারি।”

তেজগাঁও পবিত্র জপমালা রাণীর র্গীজায় গভীর শ্রদ্ধায় পোপ ফ্রান্সিসের স্মরণে অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ খ্রিষ্টযাগ

উল্লেখ্য, ভাটিকানের নিউজ অনুযায়ী গত  ২১ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দইতালির স্থানীয় সময় সকাল ৭:৩৫ মিনিটে পোপ ফ্রান্সিস তার নিজ বাস ভবন কাসা সান্তা মার্তায় মৃত্যুবরণ করেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮৮ বছর। আরো উল্লেখ্য করা যায় যে  তিনি ছিলেন প্রথম লাতিন আমেরিকান এবং জেজুয়েট যিনি ক্যাথলিক মন্ডলীর প্রধান নির্বাচিত হন।

পোপ ফ্রান্সিসের ডাক নাম ছিল হোর্হে মারিও বেরগোলিও, তার জন্ম আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আইরেসে। ২০১৩ সালে নির্বাচিত হয়ে তিনি ১২ বছর এই গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে সেবা দিয়েছেন, এবং এই সময়ে মন্ডলী সংস্কার ও আধুনিকায়ন এর চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।

জীবনের প্রায় শেষ মাসগুলোতে পোপ ফ্রান্সিস গুরুতর শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, যা পরে নিউমোনিয়ায় রূপ নেয়। তবুও সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায়, মৃত্যুর একদিন আগেও তিনি “ সেন্ট পিটার স্কোয়ারে“   ইস্টার সানডেতে খ্রিস্টভক্তদের  সামনে উপস্থিত হন, এবং প্রার্থনাপূর্ন আর্শীবাদ প্রদান করেন।

খ্রিষ্টযাগের পরে  পোপ ফ্রান্সিসের স্মরণে বিশেষ প্রার্থনা করা হয় এবং স্মৃতিচারণ করেন আর্চবিশপ বিজয় ও কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও, একই সাথে তারা পোপের স্মৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন ।

এছাড়াও ইতালি ও ফিলিপাইন এর রাষ্ট্রদূত, কানাডার হাইকমিশনার, সুইজারল্যান্ডে চার্জ ডি এ্যাফেয়ার্স, ইনএনডিপি এর প্রতিনিধিসহ অন্যান্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ পোপের স্মৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

 খ্রীষ্টযাগের শেষে দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা এর পক্ষে পোপ ফ্রান্সিসের স্মৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রেসিডেন্ট ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া, বোর্ড ডিরেক্টর মনিকা গমেজ ও ক্রেডিট কমিটির চেয়ারম্যান উমা ম্যাগডেলিন গমেজসহ অন্যান্য নেতৃবর্গ।

এছাড়াও পোপ এর স্মৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশস অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস (কাককো) লি:, এর চেয়ারম্যান পংকজ গিলবার্ট কস্তা, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি:, এর চেয়ারম্যান আগষ্টিন প্রতাপ গমেজ ও সেক্রেটারি হেনরী পেপিলন পিউরিফীকেশনসহ নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সিষ্টারগণ, ফাদারগণ ও সাধারণ খ্রীষ্টভক্তবৃন্দ।

তেজগাঁও ধর্মপল্লীতে বিনম্র শ্রদ্ধায় প্রায় ৩০জন  ফাদার  কয়েকজন ব্রাদার ও প্রায় ৫০জন সিস্টার এবং প্রায় ৩০০০ (তিন হাজার) খ্রিষ্টভক্ত  পবিত্র এই খিষ্টযাগে অংশগ্রহণ করেন। - আরভিএ সংবাদ