ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশে বন্যার্তদের পাশে শুকনো খাবার নিয়ে সিস্টারস অফ চ্যারিটি অফ সাধু ভিনসেন্ট ডি’ পল সংঘের সিস্টারগন
গত ৩ থেকে ৬ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশে বন্যার্তদের পাশে শুকনো খাবার বিতরণ করেন সিস্টারস অফ চ্যারিটি অফ সাধু ভিনসেন্ট ডি’পল সংঘের সিস্টারগন।
কোরিয়ান একজন উপকারী বন্ধু লিউ ইওং ও এর সহযোগিতায় সিস্টারস অফ চ্যারিটি অফ সাধু ভিনসেন্ট ডি’ পল সংঘের সিস্টারগন ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বেশ কয়েকটি ধর্মপল্লীতে প্রায় ১১০০ পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করেন।
এই শুকনো খাবার এর মধ্যে ছিল চিড়া, মুড়ি, গুড়, ওরস্যালাইন, মোমবাতি এবং ম্যাচ।
যে সমস্ত ধর্মপল্লীর খ্রিস্টভক্তগন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সেই সব ধর্মপল্লী গুলো হলো বারমারী ধর্মপল্লী, মরিয়মনগর ধর্মপল্লী, ঝলঝলিয়া ধর্মপল্লী এবং দায়েরপাড়া ধর্মপল্লী।
সাধু ভিনসেন্ট ডি’ পলের উক্তিকে সামনে রেখে সিস্টারগন বলেন, “শুধুমাএ অনুভূতিশীল ভালোবাসা দিয়ে নয়, বরং এসো আমরা বাস্তব কাজেই আমাদের ভালবাসা দেখাই। এর মানে হলো আনন্দ, সাহস, অধ্যাবসায় ও সহমর্মিতা দিয়ে দরিদ্রদের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করা।” এই ক্ষুদ্র সহায়তার মধ্যদিয়ে আমরা বন্যায় প্লাবিত ভাই- বোনদের পাশে থাকতে চেষ্টা করেছি।
এই সিস্টারদের সম্প্রদায়ের মূল উদ্দেশ্য বা ক্যারিজম হচ্ছে আর্ত-পীড়িত, দীন-দরিদ্রদের মাঝে সেবা দান করা। আর এই লক্ষ্যে সাধু ভিনসেন্ট ডি’ পল সংঘের সিস্টারগণ বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন খ্রিস্টভক্ত বলেন, “আমরা সিস্টারদের অনেক ধন্যবাদ জানাই তাদের এই সহায়তা দানের জন্য। এই সময়ে সিস্টারগন আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এবং আমাদের কষ্টকে বুঝতে পেরেছেন এবং আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাই আমাদের ধর্মপল্লীর খ্রিস্টভক্তদের পক্ষ থেকে আপনাদের এই সেবাদানের জন্য অনেক ধন্যবাদ।”
গত মাসের শেষ থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা প্রবল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এই সময়ে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে, দুর্ভোগ বেড়েছে অতি মাত্রায়। মৌসুমি বৃষ্টি এবং উজানের পাহাড়ি ঢলেই এ বন্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য যে, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর ও নেত্রকোনা জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। ময়মনসিংহ বিভাগে কংস, জিঞ্জিরাম, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদসহ সমেশ্বরী নদীগুলোর পানি অতিমাত্রায় উপচে পড়ে আশপাশের অঞ্চল তলিয়ে দিয়েছে।
শেরপুর জেলার ভোগাই নদ, নাকুয়াগাঁও ও জামালপুর জেলার নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক নাসরিন আক্তার বানুর তথ্য মতে, বন্যায় সবচেয়ে বেশি রোপা আমনের জমি নষ্ট হয়েছে ধোবাউড়া উপজেলায় ১০ হাজার ৫৬০ হেক্টর।
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ২৫০ কৃষক। ১০ হাজার ৩১০ হেক্টর আমনের জমি নষ্ট হয়েছে হালুয়াঘাটে। এ উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ২৭৫ কৃষক। ফুলপুরে নষ্ট হয়েছে ৩ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমি, ১৫ হাজার ৬০০ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ময়মনসিংহের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবীর বলেন, এই বন্যায় তিনটি উপজেলায় রাস্তাঘাট ও ব্রিজ কালভার্ট ভেঙে ১৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। - আরভিএ সংবাদ