নবাই বটতলা ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত হল বাণীসেবক ও বেদীসেবকদের সেমিনার

নবাই বটতলা ধর্মপল্লীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো বাণীসেবক ও বেদীসেবকদের নিয়ে দিনব্যাপি সেমিনার

গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,  রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের অন্তর্গত নবাই বটতলা ধর্মপল্লীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো বাণীসেবক ও বেদীসেবকদের নিয়ে দিনব্যাপি সেমিনার।

এই সেমিনারের মূলসুর ছিল, “মানবপুত্র সেবা পেতে নয় বরং সেবা করতে এসেছেন”। এতে ধর্মপল্লীর মনোনীত ২২ জন ভাই ও বোনকে এই সেমিনারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। 

দিনব্যাপি এই সেমিনারের অনুষ্ঠানসূচীতে ছিল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, বাণীর গান, বাণীপাঠ, ক্ষুদ্র প্রার্থনা, অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও পাল-পুরোহিতের স্বাগত বক্তব্য।

উপাসনার বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপুণ্য দিক তুলে ধরে ফাদার স্বপন পিউরীফিকেশন বলেন, “উপাসনা হলো মণ্ডলীর পবিত্র রহস্য,  একক ও দলীয় অর্থাৎ ঐশ জনগণের প্রার্থনা সভায় সক্রিয় অংশগ্রহণ হলো সত্য খ্রীষ্টিয় আত্মার সর্বোত্তম ও অপরিহার্য করুণা ধারা।”

ফাদার পিউরীফিকেশন আরো বলেন, “গীর্জাঘর হলো পবিত্র স্থান। এখানে ঈশ্বর থাকেন। আর আমাদের প্রভু যীশু যিনি রুটির আকারে সিন্দুকে উপস্থিত আছেন। আমরা যখন প্রতি রবিবারে মা-বাবার হাত ধরে গীর্জায় আসি তখন গীর্জায় প্রবেশের সময় আমরা সকলে মাথা নত করে শ্রদ্ধা ও ভক্তিভরে যীশুর চরণে সম্মান প্রদর্শন করি। আর এর মধ্য দিয়ে ঈশ্বর, যীশু, মা-মারীয়া আমাদের প্রত্যেককে আশীর্বাদ প্রদান করেন।”

আমরা খ্রীষ্টযাগে যোগদানের মধ্য দিয়ে প্রভু যীশুকে গ্রহণ করে থাকি। আর প্রভু যীশু আমাদের অন্তরে শান্তি দান করেন। পবিত্র ক্রুশমূর্তি হলো খ্রীষ্টের যাতনাভোগ স্মরণে শ্রেষ্ঠ প্রতীক। ইহা আমাদের পরিত্রাণের চিহ্ন। নিয়ম-সিন্দুক হলো এমন একটি স্থান যেখানে যীশুর দেহ রাখা হয়। অর্থাৎ রুটির আকারে আমাদের প্রভু যীশু উপস্থিত আছেন। বাইবেল হলো ঈশ্বরের বাণী। ঈশ্বর নিজেকে এই বাইবেলের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছেন”, বলেন ফাদার স্বপন।

অন্যদিকে মূলসুরের উপর ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন বাণীসেবক ও বেদীসেবকদের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে  সহভাগিতা করেন। তিনি তার সহভাগিতায় কয়েকটি দিক তুলে ধরে বলেন, ভাতিকান মহাসভার পূণ্য উপাসনা বিষয়ক দলিলে বলা হয় আমরা যেন খ্রিস্টভক্তদের সামনে নিয়ে/ সঙ্গে নিয়ে/ যুক্ত করে উপাসনা করি।

উপাসনা হলো মণ্ডলীর প্রাণকেন্দ্র। উপাসনা হলো ঝড়নার মতো যা থেকে মণ্ডলীর শক্তি নিগর্ত হয়। উপাসনায় আমাদের সম্পূর্ণ, সক্রিয়, এবং সচেতনভাবে অংশগ্রহণ করতে হয়। আমি কার সেবা করছি এবং কার বাণী পাঠ করছি তা সচেতনভাবে করতে হবে। উপাসনায় সুসংদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। যেমন- বাণীপাঠ, উদ্দেশ্য প্রার্থনা, গান করা, প্রার্থনা করা, উত্তর দেওয়া, দান দেওয়া-উঠানো, বেদীতে যাজকদের সহায়তা করা, ইত্যাদি।

বাণীপাঠের পূর্বেই কয়েকবার সচেতনভাবে পাঠ করতে হবে, ধ্যান করতে হবে, এর অর্থ বুঝতে হতে তারপরেই বাণীপাঠ করা উচিত। বাণীপাঠের মাধ্যমে স্বয়ং ঈশ্বরই জনগণের সাথে কথা বলেন। ঈশ্বরের বাণীপাঠ করাই অর্থই হলো ঈশ্বরের বাণীর সেবক হওয়া। বেদীসেবক হওয়া অর্থই হলো মাণ্ডলীক সেবাদায়িত্বে নিজেকে আরও সক্রিয়ভাবে নিবেদন করা।

পবিত্র খ্রিস্টযাগে বাণীপাঠক ও বেদীসেবকদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রাণবন্ত, জীবন্ত ও অর্থপূর্ণ হয়ে উঠে। পরিশেষে ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিতের ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও আশীর্বাদ প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে। - ফাদার স্বপন পিউরীফিকেশন