চির নিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের যাজক আবেল বি’ রোজারিও

চির নিদ্রায় ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের ফাদার আবেল বি’ রোজারিও

গত ১৪ আগষ্ট ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,  চির নিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের ফাদার আবেল বি’ রোজারিও। মৃত্যুর পূর্বে বয়সের ভারে ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন ।

মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮৭ বছর। প্রয়াত ফাদার আবেল ৮ নভেম্বর ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে তুইতাল ধর্মপল্লীতে জন্মগ্রহণ করেন।

তার মায়ের অনুপ্রেরণায় নিজ জীবনে ঈশ্বরের আহ্বানকে উপলব্ধি করে তিনি সেমিনারীতে যোগদান করেন। সেমিনারীর সকল অধ্যয়ন শেষে তিনি ২৮ ডিসেম্বর ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে যাজক পদে অভিষিক্ত হন।

তিনি বাংলাদেশ মণ্ডলীতে অনেক গুরুত্বের সাথে বিভিন্ন ধরনের পালকীয় সেবা দিয়ে গেছেন। এক কথায় বলা যায় যে, তিনি ছিলেন একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তি এবং তার জীবন যাপন ছিলো অতি সাধারণ। 

তার জীবন দশায় অনেক মানুষের কাছে তিনি ছিলেন ভালোবাসার একটি আদর্শবান মানুষ। তার অতি সাধারণ জীবন যাপন ও প্রার্থনা পুর্ন মনোভাব, মানুষকে তার কাছে আসার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তার সৃপরামর্শে  অনেক পরিবার একত্রে থাকার অনুপ্রেরণা পেয়েছে।

এমনকি অনেক যুবক যুবতীরা ও তার কাছে আসতো নিজ জীবনের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য। তার অনুপ্রেরণায় অনেক যুবক-যুবতী ব্রতীয় জীবনে প্রবেশ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

সেমিনারীর পরিচালক হিসেবে তিনি দীর্ঘ দিন পরিচালনা দান করেছেন। আধ্যাত্নিক পরিচালক হিসেবে তিনি ছিলেন সকলের কাছে উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার স্নেহাস্পর্শে অনেক যুবক নিজের জীবনের আহ্বানকে আবিস্কার করতে প্রয়াসী হয়েছেন।

এছাড়া বিভিন্ন ধর্মপল্লীতে তিনি যাজকত্বের সেবা দিয়েছন নিরলস ভাবে। এমনকি বয়সের ভারে ক্লান্ত থেকে ও সেমিনারী এবং সিস্টারদের কনভেন্টে থেকে তিনি তাদের আধ্যাত্নিক পরিচর্যা দান করেছেন।

প্রয়াত ফাদারের অন্ত্যেসটিক্রিয়ার পবিত্র খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও। তার সাথে ছিলেন ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ ক্রুশ, বিশপ থিয়োটনিয়াস গমেজ এবং বিশপ শরৎ গমেজ সহ বিভিন্ন ধর্মপল্লী থেকে আগত অনেক ফাদার,  ব্রাদার, সিস্টার সহ অনেক খ্রিস্টভক্তগণ।

পবিত্র খ্রিস্টযাগে উপদেশ বাণী সহভাগিতা করেন বিশপ শরৎ গমেজ। তিনি  তার উপদেশ বাণীতে বলেন, “ফাদার আবেল যাজক হিসেবে আদর্শ জীবন যাপন করেছেন। যাজক হিসেবে  অদম্য উদ্দীপনা নিয়ে তিনি খ্রিস্টযাগ উৎস্বর্গ করেছেন। এছাড়া পাপস্বীকার সাক্রামেন্ত প্রদান করায় তিনি  ছিলেন গভীর অবিচল।” 

অন্যদিকে ক্যারিজমেটিক প্রার্থনার মধ্য দিয়ে তিনি অনেক মানুষকে নিরাময় দান করেছেন। মা- মারীয়ার প্রতি ছিলো তার গভীর ভক্তি। তিনি কখনো তার হাত থেকে রোজারী মালা প্রার্থনা থেকে বিরত হননি। বরং অনেককে তিনি রোজারি মালা প্রার্থনায় নিরত থাকার আহব্বান জানিয়েছেন”, বলেন বিশপ শরৎ।

বিশপ শরৎ আরো বলেন, “আজ মা মারীয়ার স্বর্গোন্নয়োনের পর্ব দিনে তিনি মায়ের নিকটে স্বর্গধামে উপনীত হতে পেরেছেন এটাই আমাদের বিশ্বাস।”

উল্লেখ্য যে, ১৫ আগষ্ট বিকাল ৪:৩০ মিনিটে পবিত্র খ্রিস্টযাগের পরে নিজ ধর্মপল্লী তুইতালে তাকে সমাহিত করা হবে।

তার এই মহাপ্রয়াণে বাংলাদেশের সকল আর্চবিশপ, বিশপ, ফাদার-ব্রাদার, সিস্টার ও খ্রিস্টভক্তদের পক্ষ থেকে পরিবারের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা। ঈশ্বর তাঁর এইভক্ত সেবককে চিরশান্তি দান করুন। - আরভিএ সংবাদ