আজ আগ্রাসনের শিকার নিরপরাধ শিশুর আন্তর্জাতিক দিবস

আজ ৪ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, আগ্রাসনের শিকার নিরপরাধ শিশুদের আন্তর্জাতিক দিবস। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষৎ।
মূলত: বিশ্বব্যাপী সব শিশুদের বিশেষ করে শারীরিক, মানসিক, আবেগময় নির্যাতনের শিকার শিশুদের জন্য অধিকার আদায়ে সচেতন হতেই এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে।
ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি যে, এই দিনটি ১৯ আগস্ট ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠা পায়। এই দিবসটি মূলত লেবাননের যুদ্ধের শিশুদের ভয়াবহ অবস্থাকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠত হয়।
পরবর্তীতে ১৯৮৩ সাল থেকে এই দিবসটি নিয়মিতভাবে পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও বিশ্বব্যাপি ৪ জুন আগ্রাসনের শিকার নিরীহ শিশুদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে ।
দিবসটি নিয়ে জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধের মধ্যে বসবাস করা শিশুরা অবর্ণনীয় ভয়াবহতার সম্মুখীন হচ্ছে। তারা ঘুমানোর সময় বাড়িতে বা খেলার সময় বাইরে নিরাপদ নয়। স্কুল ও হাসপাতালেও নিরাপদ নয়। যুদ্ধরত পক্ষগুলোর নির্মমতায় শিশুরা হত্যা, পঙ্গুত্ব, অপহরণ ও যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে এবং মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সারা বিশ্বে প্রায় ৫ কোটি শিশু যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদীদের আগ্রাসনের শিকার হয়ে চলছে। ধর্ষণ থেকে শুরু করে শিশু শ্রম, গৃহ কর্মী হিসাবে নির্যাতন, খুন, অপহরণ, পাচার ইত্যাদি চলছেই আমাদের দেশে। সব প্রতিকূল অবস্থা থেকে শিশুদের মুক্ত করাই এই দিবসটির অন্যতম প্রতিপাদ্য বিষয়।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে গাজা, ইউক্রেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধের কারণে হাজারো শিশু নিহত হয়েছে৷ নিহতের চেয়ে বেশি সংখ্যক শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে৷ তারা স্কুলে যেতে পারছে না এবং টিকার মতো অতিপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবাও পাচ্ছে না তারা।
সংস্থাটির অনুমান, সারাবিশ্বে ৪৭ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি শিশু যুদ্ধ আক্রান্ত এলাকায় বাস করছে৷ অর্থাৎ প্রতি ছয়জনে এক শিশু এমন পরিস্থিতির শিকার৷ এর ফলে রেকর্ড সংখ্যক শিশু মারা গেছে, আহত হয়েছে কিংবা অধিকার বঞ্চিত হয়েছে ।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিনা রাসেল বলেন, যেকোনো হিসেবে ইউনিসেফের ইতিহাসে বলা যায়, ২০২৪ সাল ছিল শিশুদের জন্য সবচেয়ে খারাপ বছর।
যেহেতু আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের প্রতি আমাদের সকলের যত্নশীল হতে হবে।
আগ্রাসনের শিকার নিরীহ শিশু বিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবসে আশা করি, শিশুদের সকল অধিকার বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বের সকল দেশের সরকার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন এগিয়ে আসবে।
সেই সাথে আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে শিশুদের জন্য নিরাপদ পৃথিবী গড়ে তুলতে চেষ্টা করি। - আরভিএ বাংলা বিভাগ