বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৪০০ পরিবারের মাঝে স্টার্ট ফাণ্ড বাংলাদেশের সহায়তায় কারিতাস রাজশাহীতে জরুরী ত্রাণ বিতরণ

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে স্টার্ট ফাণ্ড বাংলাদেশের সহায়তায় কারিতাস বাংলাদেশের জরুরী ত্রাণ বিতরণ

গত ২৭ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাজশাহী পবা উপজেলার চরখিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে স্টার্ট ফাণ্ড বাংলাদেশের সহায়তায় কারিতাস বাংলাদেশের জরুরী ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

এতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় ৪০০ পরিবারকে ,০০০ টাকা নগদ অর্থ, জরুরি হাইজিন কিটস্ এবং জরুরি সুরক্ষা এনএফআই (নন ফুড আইটেম) সহায়তা প্রদান করা হয়।

রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, “ভারী বৃষ্টিপাত উজান থেকে নেমে আসা উপনদীর প্রবাহে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়।

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো বাড়িঘর সম্পদ হারিয়ে স্থানান্তরের মুখোমুখি এবং গবাদিপশু রক্ষায় তারা মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত নয়; বরং আমাদের অপরিনামদর্শী কার্যক্রমের জন্য প্রকৃতি আমাদের প্রতি প্রতিশোধ নেয়। তবে দুর্যোগে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে, এটাই তো মানবিকতা ভালবাসা,” বলেন বিশপ রজিারিও।

চরখিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ সাবের আলী, চেয়ারম্যান, হরিয়ান ইউনিয়ন পরিষদ এবং মোহাম্মদ মুসফিকুর রহমাস রাসেল, চেয়ারম্যান, হরিপুর ইউনিয়ন।

এছাড়াও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু বাশির, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, পবা, রাজশাহী এবং রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও, ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল ফাদার ফাবিয়ান মারাণ্ডী, . আরোক টপ্য, আঞ্চলিক পরিচালক, রাজশাহী কারিতাস অঞ্চল।

এছাড়াও হাইজিন কিটে ছিল, ঢাকনাসহ প্লাস্টিকের বালতি (২০ লটার) ১টি, গোসলের সাবান (১৫০ গ্রাম) ৪টি, গুড়া সাবান (কাপড় কাঁচার) প্যাকেট, স্যানিটারি ন্যাপকিন প্যাকেট, প্লাস্টিক মগ (. লিটার) ১টি এবং ওআরএস (এসএমসি) ১০ টি।

পরবর্তীতে উক্ত ২০০ পরিবার থেকে মোবাইলে জরিপের মাধ্যমে ৮০ পরিবারকে জরুরি শেল্টার এনএফআই (নন ফুড আইটেম) সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে।

জরুরি শেল্টার এনএফআই- থাকবে- টারপলিন (সাইজ: ৪মি. Х মি.; ওজন: ১৭০ গ্রাম প্রতি বর্গমিটার) এবং দড়ি (নাইলন পলিআমাইড দড়ি, ব্যাস মি.মি., দৈর্ঘ্য ৩০ মিটার (প্রতি বাণ্ডিলে); মোট বাণ্ডিল)

সভাপতি মোহাম্মদ সাবের আলী বলেন, “কারিতাস বাংলাদেশ জরুরি সহায়তার মাধ্যমে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থেকে পুনর্বাসন পুনর্গঠনের কাজে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে তাই এই প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানাই।

পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের মানুষের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট দেখে কারিতাস বাংলাদেশ বসে থাকতে পারেনি। ধর্ম-বর্ণ, জাতি, শ্রেণী নির্বিশেষে কারিতাস ত্রাণ বিতরণ করছে,” বলেন আলী।

প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু বাশির বলেন, “আজকে যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে; এর মাধ্যমে এটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, মানুষের বিপদে মানুষই এগিয়ে আসে। তবে যারা সহায়তা পাচ্ছেন তারা যেন নিজেদের প্রতি নিজেরা দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করেন।

চরখিদিরপুর গ্রামের ভুক্তভোগী মোহাম্মদ রমজান আলী বলেন, “পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আতঙ্কে ছিলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম তেমন কিছু হবে না। যখন পানি বাড়তে শুরু করে তখন চিন্তায় পড়লাম। এক সময় পানি কোমড় ছাড়িয়ে যায়। উপায়ন্তর না দেখে পরিবার গবাদিপশু নৌকায় নিয়ে পদ্মার উত্তর পাড়ে চলে গিয়েছিলাম।

তিনি আরও বলেন, “কয়েকদিন হলো মাত্র ফিরে এসেছি। ঘরে খাবার নেই। বিশুদ্ধ পানির অভাব। আর এই মুহুর্তে কারিতাসের এই ত্রাণে আমাদের অনেক উপকার হবে।” -  ভিনসেন্ট চঁড়ে