কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজ এর সেক্রেটারী জেনারেলকে কারিতাস বাংলাদেশে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন
গত ৪ থেকে ৭ জুন ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, তিনদিনের এক সফরে বাংলাদেশে আসেন কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যালিস্টার ডাটন।
এই সময় তিনি মিরপুরে কারিতাসের ড্রপ-ইন সেন্টার, নিরাপদ নগর প্রকল্পের কার্যক্রম ও দুইটি ট্রাস্ট অফিস-মট্স ও কোর-দি জুট ওয়ার্কস পরিদর্শন করেন।
পরে তিনি কক্সবাজারে কারিতাস বাংলাদেশ কর্র্তৃক মায়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত নাগরিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য পরিচালিত কারিতাস এর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
কক্সবাজারে তিনি অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার জনাব শামসুদ দৌজা নয়ন, ইন্টার সেক্টর কোঅর্ডিনেশন গ্রুপের প্রিন্সিপাল কোঅর্ডিনেটর, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও এনজিও প্লাটফর্ম প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
ঢাকায় ফিরে এসে তিনি কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি, বাংলাদেশে ভাটিকানের রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ কেভিন রাণ্ডাল, এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক মো: সাইদুর রহমান ও ঢাকার আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ, ওএমআই’র সাথেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
৬ জুন ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে, কারিতাস বাংলাদেশ, কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজ এর সেক্রেটারি জেনারেলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করা হয়। এতে কারিতাস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক সেবাষ্টিয়ান রোজারিওর সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি, ঢাকার আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ, ওএমআই, খুলনার বিশপ ও কারিতাস বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বিশপ জেমস্ রমেন বৈরাগী ।
এছাড়াও কাথলিক রিলিফ সার্ভিস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ব্রনওয়েন মুর, কারিতাস লুক্সেমবার্গের বাংলাদেশ প্রতিনিধি সুভাস চন্দ্র সাহা, কারিতাস বাংলাদেশের কর্মসূচি পরিচালক দাউদ জীবন দাশ, পরিচালক অর্থ ও প্রশাসন রিমি সুবাস দাশ, সকল ট্রাস্ট ও আঞ্চলিক পরিচালক, প্রকল্প পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মীবৃন্দ।
মি. ডাটন তাকে আড়ম্বরপূর্ণ সম্বর্ধনা প্রদান করার জন্য তিনি কারিতাস বাংলাদেশকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “বিশ্বে অন্যান্য কারিতাসগুলোর মধ্যে কারিতাস বাংলাদেশ খুবই শক্তিশালি একটি সংস্থা। এটির কাজের মধ্যে নতুনত্ব রয়েছে। এই সংস্থা ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করে দুর্যোগ হ্রাসে অবদান রাখছে।” এছাড়া তিনি কারিতাসের অন্যান্য কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
কারিতাস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক সেবাষ্টিয়ান রোজারিও তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন মি. ডাটনের বাংলাদেশ সফর কারিতাস পরিবারকে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করেছে। মিস্টার ডাটনের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনার ব্যস্ত সময়সূচি সত্বেও এখানে আপনার উপস্থিতি শুধু কারিতাস বাংলাদেশের জন্য সম্মানের নয়; এটি আমাদের বৈশ্বিক কারিতাস পরিবারের সাথে সংহতি ও ঐক্যের একটি সাক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আপনার সফর বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। আমরা আশাবাদী যে রোহিঙ্গা জনগণের দুর্দশা নিরসনে আপনার উপস্থিতি ও আহ্বান বিশ্ব সম্প্রদায়কে সহায়তা বৃদ্ধিতে তাদের প্রতিশ্রুতি ও সম্পদ পুনর্নবীকরণের জন্য অনুপ্রাণীত করবে।” কারিতাস বাংলাদেশের পক্ষে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার প্রদান করা হয়। ৭ জুন ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ থেকে ফিরে যান।
প্রসঙ্গত, মিস্টার ডাটন প্রায় নয় বছর কারিতাস স্কটল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজ-এর মহাসচিব নির্বাচিত হন। পূর্বে, মিঃ ডাটন পাঁচ বছর কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজ-এর হিউম্যানিটারিয়ান (মানবিক) পরিচালক এবং দ্য স্ফিয়ার প্রকল্পের যা মানবিক সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ করে অন্তর্র্বতীকালীন পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পঁচিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ত্রাণ ও উন্নয়ন খাতে কাজ করেছেন, এই দীর্ঘ সময়ে তিনি আফ্রিকা, এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান, পূর্ব ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের ষাটটিরও বেশি দেশে কাজ করেছেন।
কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজ (সিআই) হলো ১৬২ দেশের একটি কনফেডারেশন যা বিশ্বব্যাপী তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করে। বিশ্বের যেখানেই সংকট দেখা দেয়, কারিতাস সেখানেই সাড়াদানে এগিয়ে যায়। ক্যাথলিক শিক্ষা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, কারিতাস চার্চের সামাজিক সাহায্যকারী হাত হিসাবে কাজ করে, জাতি বা ধর্ম নির্বিশেষে দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়েপড়া মানুষদের কাছে পৌঁছায়, ন্যায়বিচার এবং ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ভালবাসার উপর প্রতিষ্ঠিত একটি বিশ্ব গড়ে তুলতে। কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজ এর সদর দপ্তর রয়েছে রোমে। কনফেডারেশনের নেতৃত্বে রয়েছেন জাপানের টোকিওর আর্চবিশপ তারসিসিয়াস ইসাও কিকুচি, যিনি কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, এবং মিঃ অ্যালিস্টার ডাটন মহাসচিব হিসেবে।
কারিতাস বাংলাদেশ, কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজের ১৬২ দেশের সদস্যদের মধ্যে একটি। অন্যান্য সদস্য সংস্থার মতো, কারিতাস বাংলাদেশ জাতীয় এবং কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজ উভয় কৌশলের সাথে সমন্বিতভাবে তার সাংগঠনিক কৌশলগুলি তৈরি করে।
কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজ তার সদস্যদের জন্য তহবিল সংগ্রহ ও সরবরাহের কাজ পরিচালনা করে থাকে, বিশেষ করে জরুরি সাড়াদান প্রকল্প, এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে সমর্থন করে। - কারিতাস ইনফরমেশন ডেস্ক