দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা’র সেবাকাল উদ্বোধন

আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো ঢাকা ক্রেডিট এর সেবাকাল

গত মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট) এর সেবাকাল।

ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান কার্যালয়সহ সকল সেবাকেন্দ্রে একযোগে এই সেবাকাল উদ্বোধন করা হয়। শুধু নাগরী তুমিলিয়া সেবাকেন্দ্রের কার্যদিবস বন্ধ থাকায় সেবাকাল উদ্বোধন করা হয়নি। উল্লেখ্য যে, থেকে ৩১ মে, পর্যন্ত এই সেবাকাল চলবে।

ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়ার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার সুকুমার লিনুস ক্রুশ, বোর্ড অব ডিরেক্টর মনিকা গমেজ, প্রধান নির্বাহী অফিসার জোনাস গমেজসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং ঢাকা ক্রেডিট কর্মীবৃন্দ।

উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট কোড়াইয়া বলেন, “সেবাকালের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের আরো বেশি করে ভাবতে হবে। মূলত এই সময়ে ঋণখেলাপীরা বেশি সুবিধা নিয়ে থাকেন, কিন্তু যারা নিয়মিত সদস্য তাদের উৎসাহের জন্যও এবার কিছু সুবিধা রাখা হয়েছে। যেসকল সদস্য ঋণ পরিশোধ করতে পারে না, তাদের মানবিকতার জন্য কিছু সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু ঋণখেলাপীর মতো ব্যধি দূর করতে হলে, আমাদের নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে।

তাই ঋণ দেওয়ার আগে ভাল করে তার সক্ষমতা যাচাই করে নিতে হবে, ঋণ দিয়ে ফলোয়াপ করতে হবে এবং বর্তমানে যারা খেলাপী, তাদের সচেতন হয়ে পুনরায় ঋণ প্রদান শুরু করতে হবে। আমরা চাইনা কেউ সামাজিকভাবে ঋণ খেলাপীর দায়ে হেয়পতিপন্ন হন। সেবাকাল আমাদের সদস্যদের উন্নয়নের জন্য। তাই সেবাকাল আমাদের স্বার্থক করে তুলতে হবে,” বলেন প্রেসিডেন্ট কোড়াইয়া।

বিসিএ প্রেসিডেন্ট  নির্মল রোজারিও বলেন, “সেবাকালের মূল উদ্দেশ্য হলো, প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ উত্তম সেবা প্রদান করা। ব্যাংক বা বিমা কোম্পানীতে সাধারণত সেবাকাল বা সেবাপক্ষ করা হয়। ঢাকা ক্রেডিটের মতো এতো বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়মিত সেবাকাল পালন করছে বলে ব্যবস্থাপনা কমিটিকে ধন্যবাদ। ঢাকা ক্রেডিটের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং যারা কর্মী রয়েছেন, তারা সেবার প্রতি যে এত গুরুত্ব দিয়েছেন, তার জন্য ধন্যবাদ জানাই আপনাদের।

দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা’র সেবাকাল উদ্বোধন

ঢাকা ক্রেডিটকে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা ক্রেডিট ইউনিয়ন অনুসরণ করে, তাই আপনাদের সেবার মান স্ট্যান্ডার্ট রাখতে হবে এবং সেই মতোই কাজ করছেন। যারা ঋণখেলাপী রয়েছেন তাদের আহ্বান জানাই, এই সেবাকালের সুযোগ নিয়ে যেন নিয়মিত হন এবং সামাজিকভাবে মূলস্রোতে ফিরে আসেন। সেবাকাল হলো একটি কোয়ালিটি সার্ভিসের মহড়া, এই মহড়া থেকে যেন শিক্ষা নিয়ে সারা বছর আমরা কোয়ালিটি সার্ভিস দিতে পারি,” বলেন রোজারিও।

সাধনপাড়া সেবাকেন্দ্রে সেবাকাল উদ্বোধনকালে ভাইস-প্রেসিডেন্ট পাপড়ী দেবী আরেং বলেন, “সেবাকাল হলো সদস্যদের আরো উন্নত সেবা প্রদানের সময়। এই সময়ে ভালো সার্ভিস দিয়ে সারা বছর সদস্যদের সেই মানের সেবা প্রদান করতে হবে। ছাড়াও সদস্যগণ নানামুখী সুবিধা গ্রহণের সুযোগ পাবেন। আশা করি সবাই এই সুযোগ গ্রহণ করবেন।

সাভার সেবাকেন্দ্রে সেবাকাল উদ্বোধনকালে সেক্রেটারি মাইকেল জন গমেজ বলেন, “ঢাকা ক্রেডিটের সেবাকাল শুধুমাত্র অনিয়মিত সদস্যদের জন্য নয়। সেবাকাল সকল সদস্যদের সুবিধার কথা চিন্তা করে  মানসম্মত সেবাদানের অঙ্গীকার নিয়ে আমরা সেবাকাল শুরু করেছি।

এই মাসটি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা ক্রেডিট সদস্যদের অনেক সুযোগ দিয়ে থাকে। আমানতকারী, ঋণ গ্রহীতা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা প্রকল্প, মৃত খেলাপী সদস্যসহ সকলের জন্য সুযোগ রয়েছে। আমি আশা করব আপনারা এই সুযোগগুলো গ্রহণ করবেন এবং অন্যদের উৎসাহিত করবেন,” বলেন গমেজ।

ট্রেজারার সুকুমার লিনুস ক্রুশ বলেন, “আমরা যাই- করি, তার আগে একটা শুভ উদ্বোধন করি। আমাদের সবকাজেই যেন শুভ থাকে। আমরা ঢাকা ক্রেডিট সেবাকালে যে উদ্যোগ নিয়েছি, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। ক্রেডিট ইউনিয়নের আয়ের মূল উৎস হলো ঋণের মাধ্যমে আয়।

সদস্যদের আমানত থেকে ঋণগ্রহণ করে অনেকেই ঋণখেলাপী হচ্ছে, তাই আমাদের সতর্কভাবে ঋণ প্রদান করতে হবে। যারা ঋণ প্রদানকালে ইনভেস্টিগেশন করেন, তারা যেন আরো বেশি সচেতন হয়ে তাদের রিপোর্ট করেন। আশা করি এই সেবাপক্ষ সদস্যদের আরো ভাল সেবা প্রদান করার লক্ষে কাজ শুরু হবে,”বলেন লিনুস ক্রুশ।

প্রধান নির্বাহী অফিসার জোনাস গমেজ, “আমরা প্রত্যেকেই যদি যথাযথভাবে আমাদের কাজ করি, তাহলে সবকিছুই সার্থক হয়। এই সেবাকালে আমানতকারীরা বিশেষ সুবিধা পাবেন, ঋণ গ্রহণকারীগণও বিশেষ সুবিধা পাবেন, এরপর ঋণখেলাপীদের বোঝা লাঘবের জন্য কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তাই এই সেবাকালের সুবিধা সকলেরই গ্রহণ করা উচিত।

আমাদের কর্মীদের বার্তা সদস্যদের নিকট পৌঁছে দিতে হবে। এই সেবাকালে কর্মীদেরও মূল্যায়নের মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হবে, তাই আপনাদের সচেতন হয়ে কাজ করতে হবে,” বলেন জোনাস গমেজ।

দিন অতিথিবৃন্দরা ফিতা কেটে সেবাকালের শুভ উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানের শেষে বোর্ড অব ডিরেক্টর মনিকা গমেজ ধন্যবাদ জানিয়ে সেবাকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তী ঘোষণা করেন। - ডিসিনিউ