আকাশ গমেজের অপমৃত্যু: দায়ীদের শাস্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন

আকাশ গমেজের অপমৃত্যুতে দায়ী ব্যাক্তিদের শাস্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্মিলিত খ্রিস্টান সমাজের মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। ফেসবুক থেকে নেয়া ছবি

মঙ্গলবার সকাল :৩০মিনিটের  দিক জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সভা মানববন্ধন হয়। এই সময় প্রেসক্লাব থেকে পল্টন মোড় প্রদক্ষিণ করে এক প্রতিবাদী মিছিল করেন

আন্তনি আকাশ গমেজের অপমৃত্যুতে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভা এবং মানববন্ধন করেন সম্মিলিত খ্রিস্টান সমাজ ঢাকা বাংলাদেশ।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- সম্মিলিত খ্রিস্টান সমাজ ঢাকা বাংলাদেশের সভপতি ডমিনিক রঞ্জন গমেজ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, সাপ্তাহিক প্রতিবেশীর সম্পাদক ফাদার বুলবুল আগষ্টিন রিবেরু সহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যগণ।

আকাশ গমেজের অপমৃত্যুতে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি করেন উপস্থিত সকলে। এই বিষয়ে শেরে বাংলা থানায় অভিযুক্ত কোম্পানির নামে একটি মামলা দায়ের করা হয় বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য যে, আন্তনি আকাশ গমেজ গত ১২ সেপ্টেম্বর আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয় আকাশকে। ওই দিনই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন।

জানা যায় যে,আকাশের গ্রামের বাড়ি নবাবগঞ্জের মোহাব্বতপুরে। ছোটবেলা পিতামাতা কে হারিয়ে ছোট বোনসহ তার ঠাঁই হয়েছিল মামা-ফুফু আর খালাদের বাড়িতে। এরপর থেকে তাদের কাছেই মানুষ।

রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ থেকে বিবিএ শেষ করে জীবিকার তাগিদে ফার্মগেটের রাজাবাজার এলাকায় থেকে বেসরকারি একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন তিনি।

আকাশের মামা জেমস গমেজ ঘনিষ্ঠ বন্ধু বিশাল গমেজ জানান, আকাশের বয়স যখন ৭বছর তখন  বাবা-মাকে হারায় এবং কিছুদিন পর আকাশের ছোট বোনও মারা যায়। তারপর থেকে ছোট ফুফুকেমাবলে সম্বোধন করতো।

গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) আকাশকে তার কোম্পানি থেকে একটি বিশেষ মিটিংয়ে ডাকা হয়। অফিসের অ্যাকাউন্টস বিভাগে কাজ করায় সেদিনের মিটিংয়ে লাখ টাকা চুরির দায় চাপানো হয় তার উপর। সেই সঙ্গে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোন মানিব্যাগসহ সবকিছু রেখে দেয় অফিস কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার পর অপমান সইতে না পেরে বাসায় এসে জীবাণুনাশকের সঙ্গে গুড়ো মরিচ মিশিয়ে খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন আকাশ।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালের ঘটনার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বাড়িওয়ালা আকাশের রুমের দরজায় নক করেন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় দরজা খুলে দেন আকাশ।

একপর্যায়ে দ্রুত তাকে রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সেখানকার চিকিৎসকেরা আকাশকে ঢাকা মেডিকেলে নিতে বলেন। এরপর সেখানে থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয় আকাশকে। তবে বাঁচানো যায়নি, রক্তবমি করতে থেকে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো অবস্থায় মারা যান।

আকাশের চাচাতো ভাই ম্যানুয়েল ভিকি গমেজ বলেন, আকাশ টাস গ্রুপ, এসএমএসএ এক্সপ্রেস ফ্রাঞ্চাইজিস (TAS group, SMSA Express) নামের বেসরকারি একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন।

সেখানে অ্যাকাউন্স বিভাগের দায়িত্ব পালন করতেন আকাশ। তবে তার সঙ্গে কখনো কারও বিবাদ হয়নি। টাকা চুরির অপবাদ সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেন আকাশ।

মৃত্যুর আগে মা সম্বোধন করা ফুফুর উদ্দেশে একটি চিরকুট লিখে রেখে যায় আকাশ