রাজশাহী মুক্তিদাতা হাই স্কুলে উদযাপিত হল বিশ্ব পরিবেশ দিবস
গত ৬ জুন ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাজশাহী মুক্তিদাতা হাই স্কুলে প্রাঙ্গনে যথাযোগ্য মর্যাদা, ভাবগাম্ভিয্যতা ও আনন্দ-উৎফুল্লে উদযাপিত হল বিশ্ব পরিবেশ দিবস।
এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মূলসুর ছিল, “করবো ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা, অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা”। এই দিবসটি উপলক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনের উদ্যোগে নানান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয়েছে।
এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল ও অত্র পতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ জিল্লুর রহমান ন্যাশনাল কোর্ডিনেটর, (SAFBIN Project) কারিতাস, রাজশাহী অঞ্চল, সভাপতিত্ব করেন অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার রঞ্জন লূক পিউরিফিকেশন সিএসসি। অতিথিদের আসন গ্রহণ ও ফুরের তোড়া প্রদান করে বরণ করে নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই উদ্বোধনী ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মুক্তিদাতা হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা মিসেস সবিতা মারান্ডী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “পরিবেশ রক্ষা করার জন্য আমাদের সকলের ভূমিকা রয়েছে। পরিবেশকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করার জন্য এই ধরণির প্রতি আমাদের থাকতে হবে অনেক সহমর্মিতা। তিনি বনভূমি সংরক্ষনের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন যে গাছ না কেঁটে বরং আমরা যেন গাছ রোপন করি।”
প্রধান অতিথিও ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী বৃক্ষ নিধন না করার আহবান জানিয়ে বলেন, “গাছ আমাদের পরম বন্ধু। কারন প্রতিটি বৃক্ষই আমাদের বেঁচে থাকার জন্য সর্বদা অক্সিজেন দিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা সকলকেই যেন পরিবেশ বান্ধব হই।”
প্রধান বক্তা হিসেবে ন্যাশনাল কোর্ডিনেটর মো. জিল্লুর রহমান পরিবেশ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি তার বক্তব্যে আলোকপাত করে বলেন, “কেন আজ পরিবেশের এতো বিপর্যয়, মানুষ কী কী উপায়ে বা কীভাবে পরিবেশ ধ্বংস করছে, পৃথিবী এতো উষ্ণায়নের কারন কি কি? আর আামদের করণীয় কি? শিক্ষার্থীরা যেন এই বিষয় গুলো মনোযোগ সহকারে অনুধাবন করেন।”
প্রধান শিক্ষক তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা যেন পরিবেশকে নষ্ট না করি, পরিবেশকে আমরা যদি নষ্ট করি তাহলে পরিবেশও তার প্রতিদান ফিরিয়ে দিবে চরণ ভাবে। কারন মনে রাখতে হবে এই ধরিত্রি আমাদের মায়ের মতো।”
“মা যেমন আমাদের যত্ন করেন ঠিক তেমনি ভাবে এই ধরণি আমাদের যত্ন নিয়ে থাকে। তাই আমাদের আজ অঙ্গিকার করা দরকার আমরা আর পরিবেশ নষ্ট না করি”, বলেন প্রধান শিক্ষক ।
পরিশেষে পরিবেশ দিবসকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে কিছু বৃক্ষ রোপণ করা হয়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী জানিয়েছেন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বিভিন্ন গাছের চারা বিতরণ করা হবে। এছাড়া এবছর বর্ষা মৌসুমে সারাদেশে ৮ কোটি ৩৩ লাখ ২৭ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হবে।
১৯৬৮ সালের ২০ মে জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিষদের কাছে একটি চিঠি পাঠায় সুইডেন সরকার। চিঠির বিষয়বস্তু ছিল প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে তাদের গভীর উদ্বেগের কথা। সে বছরই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সাধারণ অধিবেশনের আলোচ্য সূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
পরের বছর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সমাধানের উপায় খুঁজতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তখন সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সম্মতিতে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ১৯৭২ সালের ৫ থেকে ১৬ জুন জাতিসংঘ মানব পরিবেশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনটি ইতিহাসের প্রথম পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের স্বীকৃতি পায়। পরে ১৯৭৩ সালে সম্মেলনের প্রথম দিন ৫ জুনকে জাতিসংঘ ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়।
এরপর ১৯৭৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিবছর দিবসটি সারা বিশ্বে পালন করা হচ্ছে। - ব্রাদার রঞ্জন পিউরিফিকেশন সিএসসি