জুবিলীবর্ষে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশে বাংলাদেশ বিশপ সম্মিলনীর তীর্থযাত্রা

গত ৭ থেকে ৯ মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বাংলাদেশ বিশপ সম্মিলনী ও ভাটিকান দূতাবাসের সেক্রেটারী জুবিলীবর্ষে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশে তীর্থযাত্রা করেন।
বাংলাদেশ বিশপ সম্মিলনীর এই তীর্থযাত্রার মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের জয়পুরহাট ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন ধর্মপল্লী এবং জয়পুরহাটে আলোচ্য নতুন ধর্মপ্রদেশের বিশপ ভবন নির্মাণের জায়গা পরিদর্শন করা।
উল্লেখ্য যে, গত ৭ মার্চ সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশপ ভবনে আগমনের মধ্য দিয়ে তিনদিনের এই জুবিলীর তীর্থযাত্রা শুরু হয়।
বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, “যিশু খ্রিস্টের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তীর্থযাত্রার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সকল ধর্মপ্রদেশের বিশপ এবং ভাটিকান দূতাবাসের নবনিযুক্ত সেক্রেটারী মন্সিনিয়র আবেল তগলোর আগমনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ আজ আশির্বাদিত।”
তীর্থযাত্রার শুরুতেই ৮ মার্চ ছিলো লক্ষ্মীকোল ধর্মপল্লী পরিদর্শন। উঁরাও নৃত্য-গীত কৃষ্টিতে সবাইকে বরণ করা হয়।

ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ বিজয় এন. ডি’ক্রুজ তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “পাল পুরোহিত ফাদার এমিল এক্কার আন্তরিকতায় আমরা বিশপগণ অত্যন্ত আনন্দিত। আপনাদের কাজের মধ্য দিয়ে যেন জনগণ যিশুকে জানতে পারেন।”
লক্ষ্মীকোল ধর্মপল্লী পরিদর্শনের পর বিশপগণ জয়পুরহাট জেলার উপকণ্ঠে অবস্থিত খঞ্জনপুর ধর্মপল্লীর নিকটবর্তী আলোচ্য নতুন ধর্মপ্রদেশের বিশপ ভবন নির্মাণের জন্য জায়গা পরিদর্শনে যান।
সেখানে আর্চবিশপ বিজয় এন. ডি’ক্রুজের পরিচালনায় বিশপ, ফাদার ও অন্যান্যরা প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর খঞ্জনপুর ধর্মপল্লীতে মাহালী কৃষ্টিতে বিশপদের বরণ করা হয়।
চাঁদপুকুর ধর্মপল্লীতে যাওয়ার পথিমধ্যে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ঐতিহ্যবাহী বেণীদুয়ার ধর্মপল্লীতে সাঁন্তালী কৃষ্টিতে শুভেচ্ছা জানান ধর্মপল্লীর ফাদার, সিস্টার ও জনগণ।
চাঁদপুকুর ধর্মপল্লীতেও সাঁন্তালী দাসাই নৃত্যের মাধ্যমে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পাল পুরোহিত ফাদার বাবলু কোড়াইয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে ধর্মপল্লীর ইতিহাস তুলে ধরেন। পরিশেষে, কাটাডাঙ্গা ও ভূতাহারা ধর্মপল্লী পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে তীর্থযাত্রা শেষ হয়।

ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ এবং বাংলাদেশ বিশপ সম্মিলনীর সেক্রেটারী পল পনেন কুবি তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “আমি বিশপ জের্ভাস রোজারিও’কে আমাদের জন্য এই তীর্থের আয়োজন করায় আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। উনার সুবাধে নওগাঁ ও জয়পুরহাট জেলায় অবস্থিত ধর্মপল্লীগুলো দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।”
“আর সত্যি এটা ছিলো ঈশ্বরের নিকট থেকে এক অনন্য উপহার। ঈশ্বরের আশির্বাদ রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ওপর নেমে আসুক”, বলেন বিশপ পল পনেন কুবি ।
বাংলাদেশে ভাটিকান দূতাবাসের সেক্রেটারী মন্সিনিয়র আবেল তগলো বলেন, “রাজশাহী ধর্মপ্রদেশে আসতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। এটাই আমার বাংলাদেশে ঢাকার বাইরে প্রথম আসা।”
“এই তীর্থযাত্রার মধ্য দিয়ে খ্রিস্টভক্তদের জীবন বাস্তবতা ও সংগ্রাম দেখেছি। এছাড়া বাংলাদেশের সকল বিশপের সাথে এভাবে আর কখনো বেড়ানো হবে না; তাই সত্যিই আমি ভাগ্যবান”, বলেন মন্সিনিয়র আবেল তগলো । - ফাদার সাগর কোড়াইয়া