পশ্চিমবঙ্গের বারুইপুর ধর্মপ্রদেশের BEC সদস্যদের দীশারিতে বড়দিনের প্রীতি সম্মেলন

গত ৪ঠা জানুয়ারি ২০২৪, দীশারি পাস্টারাল সেন্টারে BEC তথা বেসিক এক্লেশিয়াল কম্যুনিটির সদস্যবৃন্দ বড়দিনের প্রীতিসম্মেলনে সম্মিলিত হয়।

সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে মহা খ্রীষ্টযাগের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রায় ২৩৪ জন সদস্য এই অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।

সম্মিলিত ভাবে খ্রীষ্টযাগ উৎসর্গ করেন রেভাঃ বিশপ শ্যামল সহ ফঃ কনৌজ. ফঃ সৌমেন, ফঃ রাজেন,ফঃ ফ্রান্সিস মাখাল,ফঃ গৌতম, ফঃ হিমাংসু, ফঃ রমেন ফঃ অলক কাঁজি, প্রদীপ রয়, ফঃ দীপক এক্কা প্রমুখ পুরোহিতবর্গ। পৌরহিত্য করেন মাননীয় ধর্মপাল শ্যামল বোস।

খ্রীষ্টযাগের শুরুতে শোভাযাত্রা সহকারে বাইবেল আরতি ও প্রতিস্থাপন করা হয়।উপদেশে বিশপ মহোদয় BEC অর্থাৎ ক্ষুদ্র খ্রীষ্টমণ্ডলীর সদস্যদের প্রকৃত দায়বদ্ধতা ও ভূমিকার কথা স্মরণ করান। শুধু বছরেএকটা দিন উদযাপন করলে শেষ হয়ে যায় না। সারা বছর একে অপরকে সাহায্য করে, মিলেমিশে সংঘবদ্ধ ভাবে থাকা। কেউ বিপদে, কষ্টে থাকলে সবাই মিলে সাহায্য করা, দ্বন্দ্ব কলহ থেকে মুক্ত রাখা। নিজেদের উন্নতি করা।মণ্ডলীর কাজ করা।

একইভাবে প্রতিবেশী ও অন্যান্য ধর্মের মানুষ জনের সাথে পরস্পর মিলে মিশে থাকা, সমাজে মানবিক বিকাশে অংশীদার হওয়ার কথাও তিনি মনে করান।

খ্রীষ্টযাগ শেষ হতেই সম্মিলিত ফোটো সেশন শেষ করে সকলে দীশারিতে জমায়েত হয়। শুরু হয় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব।

অতিথি বরণ ও অগ্নি প্রজ্জ্বোলনের মধ্য দিয়ে এই পর্বের শুভ সূচনা হয়। প্রজ্জ্বোলনে সহায়তা করেন মাননীয় বিশপ শ্যামল বোস, ভিকার ফঃ কনৌজ রয়, ফঃ গৌতম নস্কর,চন্দনা রোজারিও ও শ্রী অজয় নস্কর।

 তবে এই দিনের অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল ক্রিসমাস ক্যারল প্রতিযোগিতা।যেখানে ধর্মপ্রদেশের বিভিন্ন ধর্মপল্লী ও সাব ষ্টেশণ মিলিয়ে প্রায় ১৫ টি দল অংশ নিয়েছিল। বিচারকের আসনে ছিলেন ফঃ তুষার আগষ্টিন, ফঃ অলক কাঁজি, ফঃ রমেন পৈলান ও চন্দনা রোজারিও।

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে মায়েরা তাদের গান পরিবেশন করছিল। যেখানে কচিকাচা থেকে বৃদ্ধা, সবার প্রচেষ্টার ত্রুটি ছিল না। যার জন্য বিচারকদের ভাবতে হচ্ছিল কাকে ফেলে কাকে জয়ী করে।

অবশেষে পঞ্চম খণ্ড প্রথম, মরাপাই দ্বিতীয়া ও ঠাকুরপুকুর দল তৃতীয় স্থান দখল করে। বিশপ মহোদয় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে উপহার তুলে দেন।

বিশপ তাঁর বার্তায় মায়েদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পরিবারে পিতার ভূমিকার সূত্র ধরে সাধু যোসেফের তুলনা দেন। কিভাবে নি:শব্দে তিনি মারিয়ার পাশে থেকে ঈশ্বরের কাজে সাহায্য করেছিলেন। তাই ক্ষুদ্র খ্রীষ্টমণ্ডলীতে পিতাদের ভূমিকার কথা স্মরণ করান।

ফঃ কনৌজ তাঁর বার্তায় বলেন,"যীশুর জন্ম রহস্য যা ঈশ্বরের বিশেষ পরিকল্পনা মা মারিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছিল"।

সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন দীশারি পরিচালক ফঃ গৌতম নস্কর। খীষ্টযাগে অরিত্র ও দলের সুন্দর সংগীত পরিবেশন ও সৌরভের সাবলীল সঞ্চালনা অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে রেখেছিল।

শেষে সকলের জন্য উপহার দান ও মধ্যাহ্ন ভোজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। প্রতিবেদন – চন্দনা রোজারিও।