কলকাতার বড়বাজার পর্তুগিজ ক্যাথিড্রালে মধ্যরাতে বড়দিন উৎসব পালন

গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, বড়বাজার  ব্রেবোর্ণ রোডে অবস্থিত  ক্যাথিড্রাল অব দ্য মোস্ট হোলি রোসারি চার্চ যা মুর্গিহাটা চার্চ  নামে পরিচিত, মধ্য রাতে বড়দিনের খ্রীষ্টযাগ  সাড়ম্বরে পালিত হল।

ওই  দিনটি কলকাতার আর্চডায়োসিস  ও ক্যাথিড্রাল ধর্ম পল্লীবাসীদের কাছে ছিল  অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ  একটি দিন। টান টান  উত্তেজনা নিয়ে সবাই শুভ মুহূর্তের  অপেক্ষা করছিল।কারণ পশ্চিমবঙ্গের  মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বড়দিনের  ক্রিব তথা গোশালা ঘর উদ্বোধন করতে আসছেন। তাঁর  এই  ঝটিকা সফরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ,প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট  অতিথিবর্গ  উপস্থিত ছিলেন।

নির্ধারিত সময়ে ক্যাথিড্রাল  প্রাঙ্গনে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত  হলে কলকাতার আর্চডায়োসিসের আর্চবিশপ মোস্ট রেভারেন্ড এলিয়াস ফ্র্যাঙ্ক  পুষ্প স্তবক দিয়ে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে সাদর  অভিনন্দন জানান।এরপর  ফিতে কেটে গোশালা উদ্বোধন  শেষ হতেই বিশপ মহোদয় ক্রিব আশীর্বাদ করেন ও শিশু যীশুর  পায়ে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন। এই সময় ডায়োসিসের  তরফ থেকে একটা ক্রিব  উপহার  স্বরূপ   মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর  হাতে তুলে দেওয়া হয়।এরপর মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী  ও অন্যান্য  বিশিষ্ট  ব্যক্তিবর্গ  একই  ভাবে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে গির্জা অভিমুখে যাত্রা করেন ও বড়দিনের  গান  অর্থাৎ ক্রিসমাস  ক্যারল  শোনার জন্য প্রস্তুত  হন।

দিলীপ  রোজারিও ও দল দুটি বাংলা গান ,ক্যাথিড্রাল অব দ্য মোস্ট  হোলি রোসারি চার্চের  কয়ারের  সদস্য  বৃন্দ দুটি ক্যারল  পরিবেশন করেন।  এরপর   ধর্ম  পল্লীর পাল পুরোহিত  ফ: ফ্রাঙ্কলিন  মেনেযেস  বড়দিনের  বার্তা পাঠ করেন। শেষে বিশপ মহোদয়   দিদিকে বিশেষ  আশীর্বাদ  প্রদান করেন। ক্যাথিড্রাল  ও ডায়োসিসের  সকল  পুরোহিত  ও মণ্ডলীর হয়ে  দিদিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।অমূল্য সময়  ব্যয় করার জন্য। এভাবেই বড়দিনের  রাতের  প্রথম পর্ব শেষ হয়।

বড়দিন রাতের  মূল অনুষ্ঠান  শুরু হয় পবিত্র  মহা খ্রীষ্টযাগ উদযাপনের  মাধ্যমে।খ্রীষ্টযাগ  শুরু হয় রাত্রি দশটায়। খ্রীষ্টযাগে পৌরহিত্য করেন  আর্চবিশপ মোস্ট রেভারেন্ড এলিয়াস ফ্রাঙ্ক ।সহযোগিতা করেন ক্যাথিড্রালের পাল পুরোহিত ফাদার ফ্রাঙ্কলিন মেনেযেস, ফ: কমল কিশোর,ফ: ম্যাথাই,ফ: রুডলফ্।

উপদেশে বিশপ এলিয়াস  বলেন, "বড়দিন  মানে শুধুমাত্র  ক্রিসমাস  ক্যারল,গিফট বা উপহার  দান, গোশালা বা ক্রিসমাস ট্রি  বাড়িঘর সাজানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ  থাকলে হবে না"। "আমাদের ঈশ্বর পুত্র  যীশুর  মর্ত্যলোকে আসার প্রকৃত অর্থ  উপলব্ধি করতে হবে।নিজের  জীবন দিয়ে  যিনি জগতে পরিত্রাণ এনেছিলেন।" তিনি বলেন, "বড়দিন হল সেবা,প্রেম ও ভালোবাসা ,শান্তির  বাণী ছড়িয়ে দেওয়া।"

খ্রীষ্টযাগ শেষ হতেই  ভক্ত বৃন্দ শিশু  যীশুর  পায়ে চুম্বন  করে বার হয় ও পরস্পর  শুভেচ্ছা বিনিময় করে, বড়দিনের  কেক খেয়ে উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠে। প্রতিবেদন – চন্দনা রোজারিও।