আজ আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস

আজ আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস

আজ ২২ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে ধারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং করণীয় নির্ধারণে দিবসটি গুরুত্বপূর্ণ।

এই বছর  জীববৈচিত্র্য দিবসের মূলসুর হচ্ছে “প্রকৃতির সাথে সম্প্রীতি এবং টেকসই উন্নয়ন”। এই প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে মানুষ এবং প্রাকৃতিক বিশ্বের মধ্যে অন্তর্নিহিত সংযোগ তুলে ধরে।

প্রাণ ও প্রকৃতির ভিত্তি হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। মানুষ, কর্মসংস্থান ও টেকসই উন্নয়নসহ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সবক্ষেত্র, যেমন কৃষিকাজ, বনায়ন, মৎস্য সম্পদ, পর্যটনের সঙ্গে জীববৈচিত্র্য গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত।

বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, এই পৃথিবীতে আমাদের ভালোভাবে টিকে থাকার জন্য সবচেয়ে আগে দরকার পরিবেশের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলা ও ভারসাম্য ঠিক রাখা।

এক গবেষণায় দেখা যায় যে, আমাদের বাংলাদেশটা ছোট হলেও দেশের মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য আছে। বিশেষ করে কৃষি ও জীববৈচিত্র্যের এক সমৃদ্ধ ভান্ডার হলো আমাদের এই দেশ।

পৃথিবীর খুব কম দেশই আছে, যে দেশে বাংলাদেশের মতো ফসলবৈচিত্র্য রয়েছে। এ দেশে প্রায় ৪০০ রকমের ফসল ফলে। আবার এ দেশে রয়েছে সেসব ফসলের হাজার হাজার জাতবৈচিত্র্য।

একসময় শুধু ধানেরই ১২ হাজারের বেশি জাত এ দেশে ছিল। ফসলের মতো রয়েছে অন্যান্য উদ্ভিদবৈচিত্র্য। এ দেশে রয়েছে প্রায় ৬ হাজার প্রজাতির গাছপালা, ১ হাজার ৬০০ প্রজাতির মেরুদণ্ডী প্রাণী ও ২ হাজার ৫০০ প্রজাতির অমেরুদণ্ডী প্রাণী।

জীববৈচিত্র্য শব্দটি ১৯৮৬ সালে ওয়াল্টার জি. রোজেন দ্বারা প্রবর্তিত হয়েছিল। তিনি জীববৈচিত্র্য শব্দটিকে 'প্রাণের উপাদান' হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। জীববৈচিত্র্য হল 'জৈবিক বৈচিত্র্য' এর সংক্ষিপ্ত রূপ এবং এটি পৃথিবীতে জীবনের জৈবিক বৈচিত্র্য এবং পরিবর্তনশীলতা।

মানুষ, প্রাণী ও প্রকৃতি মিলিয়েই আমাদের পৃথিবী নামের সবুজ গ্রহটি। বিশ্ববাসীর ব্যবহারের জন্য একটি মাত্র এ জীবমন্ডলটি রয়েছে। মানুষ এটিকে এতোটাই নির্দয়ভাবে ও নির্বিচারে ব্যবহার করছে। বর্তমানে সমস্ত বিশ্ব ব্যবস্থাই হুমকির দরজায় এসে দাঁড়িয়ে আছে।

জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতেই জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি ১৯৯৩ সালের শেষদিকে ২৯ ডিসেম্বর নির্ধারণ করলেও পৃথিবীর অনেক দেশে ঐ সময়ে সরকারি বন্ধ থাকায় ২০০০ সালে ২২ মে দিনটি বিশ্ব জীব বৈচিত্র্য দিবস হিসেবে উদযাপন করে আসছে।

বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবসের ধারণটির সূচনা হয় ১৯৯২ সালে। রাষ্ট্র, সরকার ও পৃথিবীর বড় বড় সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে ব্রাজিলের রিও-তে শীর্ষ ধরিত্রী সম্মেলন-এ জীব বৈচিত্র্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

জীববৈচিত্র্য মানুষের জন্য কেন এত গুরুত্বপূর্ণ কারণ মানুষ বেঁচে থাকার জন্য জীববৈচিত্র্যের উপর নির্ভর করে, যেমন আমরা যে খাবার খাই, সুস্থ থাকার জন্য আমরা যে ওষুধ ব্যবহার করি এবং আমাদের ঘর তৈরিতে আমরা যে উপকরণ পরিধান করি বা ব্যবহার করি তার জন্য । এই পরিষেবাগুলি হল বাস্তব পণ্য বা জিনিসপত্র যা আমরা এবং অন্যান্য প্রজাতি বেঁচে থাকার জন্য ব্যবহার করি।

পৃথিবীতে জীবন টিকিয়ে রাখা, বাস্তুতন্ত্রের পরিষেবা বজায় রাখা এবং মানুষের কল্যাণে সহায়তা করার জন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

পরিবেশবান্ধব বাসযোগ্য বিশ্ব গড়ে তুলাই এই দিবসের মূল লক্ষ্য। তাই আসুন জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করি, সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলি। - আরভিএ