রাজশাহী ধর্মপ্রদেশে অনুষ্ঠিত হল ৫৮তম বিশ্ব সামাজিক যোগাযোগ দিবস

খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো ৫৮তম বিশ্ব সামাজিক যোগাযোগ দিবস

গত ১২ মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো ৫৮তম বিশ্ব সামাজিক যোগাযোগ দিবস।

এই দিবসের মূলসুর ছিল “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং হৃদয়ের জ্ঞান পরিপূর্ণ মানব যোগাযোগ।” এতে  ধর্মপ্রদেশের প্রায় ৮০জন যুবক-যুবতী অংশগ্রহণ করেন।

উক্ত দিবসে উপস্থিত ছিলেন ফাদার নিখিল এ গমেজ, কো-অর্ডিনেটর, রেডিও ভেরিতাস এশিয়া বাংলা বিভাগ, ফাদার সুনীল ডানিয়েল রোজারিও, পরিচালক, অনলাইন রেডিও জ্যোতি, ফাদার বাবলু কোড়াইয়া, আহ্বায়ক, ধর্মপ্রদেশীয় সামাজিক যোগাযোগ কমিশন।

এই দিবস উপলক্ষে দিনের শুরুতেই ছিল পবিএ খ্রিস্টযাগ। এই খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন ফাদার সুনীল ডানিয়েল রোজারিও এবং সহার্পিত খ্রিস্টযাগে অংশনেন ফাদার নিখিল গমেজ ও ফাদার বাবলু কোড়াইয়া।

খ্রিস্টযাগের উপদেশ বাণীতে ফাদার বিশ্ব যোগাযোগ দিবস, স্বর্গারোহণ পর্ব ও মা দিবসের ওপর সহভাগিতা করেন।

তিনি তার উপদেশ বাণীতে বলেন, “তোমরা জগতের সর্বএই যাও, বিশ্ব সৃষ্টির কাছে তোমরা ঘোষণা করো মঙ্গলসমাচার।”  এই বাণীর আলোকে তিনি বলেন, “এই আধুনিক যুগে গণমাধ্যম হলো একটি সৃষ্টি ও উপকরণ যার মধ্যদিয়ে আমাদরে বাণী প্রচার করতে হবে।” 

খ্রিস্টযাগের পরে ফাদার সুনীল ডানিয়েল রোজারিও পুণ্যপিতা পোপ মহোদয়ের বাণীর উপর সহভাগিতা করে বলেন, “পুণ্যপিতা পোপ মহোদয় এ বছর যোগাযোগ দিবস উপলক্ষে যে বাণী দিয়েছেন তার মূলকথা হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও হৃদয়ের  জ্ঞান: পরিপূর্ণ মানব যোগাযোগ।”

তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলতে এখানে যন্ত্রের জ্ঞানকে বুঝিয়েছেন। যন্ত্রের শিক্ষা কখনো প্রকৃত শিক্ষা হতে পারে না, তাই পুণ্যপিতা পোপ মহোদয় আমাদের অনুরোধ করেন আমরা যেন যন্ত্রের দ্বারা পরিচালিত না হই।

রেডিও ভেরিতাস এশিয়া বাংলা বিভাগের কো-অর্ডিনেটর ফাদার নিখিল এ গমেজ বলেন, “প্রতি বছর আমরা বিশ্ব সামাজিক যোগাযোগ দিবস উদযাপন করে থাকি। আর এই দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো, আমরা যেন আধুনিক গণমাধ্যম ব্যবহার করে বিশ্ব সৃষ্টির কাছে মঙ্গলসমাচার ঘোষণা করি।”

ফাদার সাগর কোড়াইয়া, ব্যক্তিজীবনে নিজের লেখালেখির অভিজ্ঞতা ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সুফল-কুফল সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং বলেন, লেখালেখির জন্য জ্ঞানের চেয়ে বেশি প্রয়োজন কল্পনাশক্তি। লিখতে চাইলে পড়তে হবে এবং জানতে হবে।

পরে ফাদারগণ ও অংশগ্রহণকারী সকলে প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এবং ভবিষ্যতের জন্য বাস্তববাদী ও যুগোপযোগী পরিকল্পনা ধর্মপ্রদেশের জন্য গ্রহণ করা হয়।

অংশগ্রহণকারী একজন যুবক আইনালিউস তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “আগে রিপোর্টিং বিষয়ে তেমন ধারণা ছিল না তবে এ প্রোগ্রামে এসে তা শিখতে পেরেছি।”

আরেকজন অংশগ্রহণকারী যুবতী শ্রেয়া মন্ডল বলেন, “এ প্রোগ্রামে এসে একজন লেখক হওয়ার জন্য যে সকল কৌশল ও গুণ থাকা প্রয়োজন তা শিখেছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের সেমিনার আমাদের মেধা বিকাশে সহায়তা করবে বলে আমি মনে করি। তাই যারা এ প্রোগ্রাম আয়োজন করেছেন সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।”

পরিশেষে ফাদার বাবলু কোড়াইয়া সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ৫৮তম বিশ্ব সামাজিক যোগাযোগ দিবস আমরা সফলভাবে উদযাপন করতে পেরেছি তাই প্রথমতঃ ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই। সেইসাথে বিশপ মহোদয়, অন্যান্য ফাদার, সিস্টারগণ এবং তোমাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই।

তোমরা যা কিছু শিখেছো তা অন্যদের শিখাবে এবং প্রতিনিয়ত নিউজ ও লেখা পাঠিয়ে নিজের মেধাকে বিকশিত করবে। মনে রাখবে, পেয়েছি হওয়ার জন্য হয়েছি দেওয়ার জন্য এই বলে আমি এই দিবসের সমাপ্ত ঘোষণা করছি।- আরভিএ সংবাদ