ত্রিপুরা ভাষায় প্রথম খ্রিস্টযাগরীতি পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সেন্ট প্ল্যাসিডস্ স্কুল এন্ড কলেজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হলো প্রথমবারের মতো ত্রিপুরা ভাষায় খ্রিষ্টযাগরীতির পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন যা ত্রিপুরা ভাষায় “খ্রিস্তন পুসম রৈত” নামে পরিচিত।
এই পুস্তিকাটির মধ্যে দুটো অংশ রয়েছে, প্রথমটি হলো শুধু যাজকদের খ্রিষ্টযাগ রীতিমালার প্রার্থনা সমূহ আর অন্যটি হলো প্রার্থনার কার্ড, যার মধ্য দিয়ে খ্রিষ্টভক্তগণ খ্রিষ্টযাগের প্রার্থনার উত্তর গুলো সন্নিহিত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ সুব্রত হাওলাদার এই পুস্তিকার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রকাশ করে বলেন, “সিনোডে অংশগ্রহণ কালে একটি বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছিরো যে খ্রিষ্টযাগ রীতি যেন প্রত্যেক ভাষায় অনুবাদ করা হয় সেই লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
আর্চবিশপ বিশপ সুব্রত আরো বলেন, “পার্বত্য চ্টগ্রামের ত্রিপুরা অনেকেই পবিত্র খ্রিষ্টযাগে অংশগ্রহণ করেন কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকায় যারা বয়স্ক তারা বাংলা ভাষায় খ্রিষ্টযাগের উত্তর গুলো দেওয়া সম্ভম হয় না। এছাড়াও বড় একটা সংখ্যা ত্রিপুরা ভাষায় কথা বলে তাই সেমিনারীয়ান সাধুমনি ত্রিপুরাকে এই দায়িত্ব অর্পন করা হয়েছিল। আর তিনি সেই দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেছেন তাই এই কাজের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই।”
ফ্রান্সিস সাধুমণি ত্রিপুরা তার অনুভুতি ব্যক্ত করে বলেন, “আজ ত্রিপুরা ভাই-বোনদের জন্য সত্যিই মহা আনন্দের দিন। কারন চট্টগ্রাম কাথলিক আর্চডাইয়োসিসের আর্চবিশপ সুব্রত হাওলাদারের অনুপ্রেরণায় আমি ত্রিপুরা ভাষায় খ্রিষ্টযাগ রীতির পুস্তিকাটি অনুবাদ করার সুযোগ পেয়েছি। আমার একার পক্ষে এ কাজ করার সম্ভব ছিলো না কারন ভাষার প্রতি দক্ষতা কম ছিলো তাই আমি স্থানীয় প্রবীণ, ভাষাবিদ ও লেখদের সাহায্য আমি পেয়েছি তাই তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।”
তিনি আরো বলেন, “এই পুস্তিকাটি অনুবাদ করতে প্রায় সাত থেকে আট মাস সময় লেগেছে। আজ এই মূহুতে সাত আট মাসের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলে আমি মনে করি। সেই সাথে পার্বত্য অঞ্চলের ত্রিপুরাবাসীদের স্বপ্নও আজ সার্থক হয়েছে।”
এই পুস্তিকাটির সম্পাদনা এবং বাংলা থেকে অনুবাদ কাজের মূল দায়িত্বে ছিলো সেমিনারিয়ান ফ্রান্সিস সাধুমণি ত্রিপুরা, জর্জ ত্রিপুরা, আগষ্টিন ত্রিপুরা, ফিলিপ ত্রিপুরা, বিশ্ব চন্দ্র ত্রিপুরা, আলী মোহন ত্রিপুরা, অনঞ্জন ত্রিপুরা, ব্রাদার মন্ত্রজয় ত্রিপুরা সিএসি, সিস্টার হানিমা ত্রিপুরা এলএইচসি এবং আরো কয়েকজন বিশিষ্ট্য ব্যক্তিবর্গ।
এছাড়া এই অনুবাদের কাজে যারা যারা সর্বাত্নক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিশপসহ, চট্টগ্রাম কাথলিক আর্চডাইয়োসিসের ভিকার জেনারেল ফাদার টেরেন্স রড্রিক্স, বান্দরবান ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার বিনয়, ফ্রান্সিস মনিক, সিস্টার এলিজাবেথ ত্রিপুরা ফিতা কেটে এই বইয়ের শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করেন।
পরিশেষে পবিত্র খিষ্টযাগের মধ্যদিয়ে ত্রিপুরা ভাষায় খ্রিস্টযাগরীতি পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান সমাপ্ত ঘোষনা করা হয়।- আরভিএ সংবাদ