সাধু পিতর সেমিনারিতে উদযাপিত হল পয়লা বৈশাখ

গত ১৪ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের অর্ন্তগত সাধু পিতর সেমিনারিতে উদযাপিত হলো বাংলা নববর্ষ বা পয়লা বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।
সাধু পিতরের সেমিনারিয়ানদের নিয়ে এই উৎসব পালন করা হয়। এতে সেমিনারির পরিচালক ফাদার বিশ্বনাথ মারান্ডী সেমিনারিয়ান ও সিস্টারদের নিয়ে পবিএ খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন।
বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ফাদার বিশ্বনাথ মারান্ডী বলেন, “ নববর্ষ আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। এই দিনটি নতুন আশা, ভ্রাতৃত্ব ও মিলনের বার্তা বহন করে। প্রভুর কৃপায় আমাদের জীবন হোক আলোর পথের যাত্রী। আমরা যেন প্রেম, শান্তি ও সেবার চেতনায় নবযাত্রা শুরু করি।”
সবাইকে বাংলা নববর্ষের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা এবং আশীর্বাদ জানিয়ে ফাদার আরো বলেন, “নতুন বছরের প্রতিটি দিন হোক ঈশ্বরের আশীর্বাদে পরিপূর্ণ।”
সকালে খ্রিষ্টযাগের পর বৈশাখের ঐতিহ্যবাহী পান্তা ইলিশ খাওয়া ও গানবাজনার মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেওয়া হয়।
বাংলা নববর্ষের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, সৌরপঞ্জি মতে বাংলায় ১২টি মাস অনেক আগে থেকেই পালন হয়ে আসছে। কিন্তু গ্রেগরীয় পঞ্জিকায় দেখা যায়, এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় এ সৌর বছর গণনা শুরু হতো।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ভারতবর্ষে মোগল সাম্রাজ্য শুরুর পর থেকে আরবি বছর হিজরি পঞ্জিকা অনুযায়ী তারা কৃষিপণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সাল চাঁদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় কৃষি ফলনের সঙ্গে এর কোনো মিল পাওয়া যেত না।
আর তখনই সম্রাট আকবর এর সুষ্ঠু সমাধানের জন্য বাংলায় বর্ষপঞ্জি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সম্রাটের আদেশ অনুযায়ী সে সময়কার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ আমীর ফতেহউল্লাহ সিরাজী সৌরবছর ও আরবি হিজরি সালের ওপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম তৈরির কাজ শুরু করেন।
বাংলা বছর নির্ধারণ নিয়ে লেখা বিভিন্ন বইয়ের প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ বা ১১ মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে পরীক্ষামূলক এ গণনা পদ্ধতিকে কার্যকর ধরা হয় ১৫৫৬ সালের ৫ নভেম্বর তারিখ থেকে অর্থাৎ সম্রাট আকবরের সিংহাসন আরোহণের তারিখ থেকে।
প্রথমে ফসলি সন বলা হলেও পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিতি পেতে শুরু করে।
ইতিহাস থেকে যত দূর জানা যায়, পয়লা বৈশাখের প্রথম অনুষ্ঠান হয়েছিল ১৯৫১ সালে। আয়োজক ছিল একটি 'লেখক-শিল্পী-মজলিশ' নামের সংগঠন, যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রখ্যাত কিছু শিক্ষাবিদ, শিল্পী ও সাংবাদিক। - লর্ড রোজারিও