ঢাকায় বসবাসরত উওর বঙ্গের খ্রিস্টান আদিবাসীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হল প্রায়শ্চিত্তকালীন প্রার্থনানুষ্ঠান
গত ৮ মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ঢাকার সেন্ট খ্রীষ্টিনা কাথলিক গীর্জায় উওর বঙ্গের খ্রিস্টান আদিবাসীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হল প্রায়শ্চিত্তকালীন প্রার্থনানুষ্ঠান।
বনানী সেমিনারীতে অবস্থানরত উওর বঙ্গের সেমিনারীয়ানদের আয়োজনে ঢাকায় বসবাসরত সকল সাঁওতাল, উঁরাও, মাহালী, মুন্ডা, পাহাড়িয়া, খাড়িয়া, মালো ও পাহান খ্রিস্টভক্তদের জন্য আয়োজন করা হয় প্রায়শ্চিত্তকালের বিশেষ প্রার্থনানুষ্ঠান। এই প্রার্থনানুষ্ঠানে প্রায় ৩০০ জন খ্রিস্টভক্ত উপস্থিত ছিলেন।
দিনের কর্মসূচি শুরুতে ছিল খ্রিস্টভক্তদের জন্য পাপস্বীকার সংস্কার এবং পবিত্র খ্রিস্টযাগ। পবিত্র খ্রিস্টযাগে প্রধান পুরোহিত্য করেন ফাদার ফ্রান্সিস মূর্মু এবং তার সাথে ছিলেন ফাদার আন্তনী হাঁসদা।
খ্রিস্টযাগের উপদেশে ফাদার আন্তনী হাঁসদা বলেন, “আমাদেরকে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে থাকার জন্য; ধ্যান-প্রার্থনা করতে হবে। শুধু প্রায়শ্চিত্তকাল নয়; আমাদের দৈনন্দিন জীবন যেন হয়ে উঠে প্রার্থনাময় জীবন। কারণ আমরা ঈশ্বরের ভালবাসায় প্রতিদিন বেড়ে উঠছি; যাতে আমরা তাঁরই সান্নিধ্যে বাস করতে পারি।”
“বাণী পাঠের আলোকে তিনি বলেন, “আমরাও অনেক সময় সেই অপব্যয়ী পুত্রের মতো জীবন-যাপন করছি; যাযাবরের মতো এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছি। অর্থাৎ ঈশ্বরহীন জীবন-যাপন করছি। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে ঈশ্বর ছাড়া জীবন অচল। তাই মাতামণ্ডলি আমাদেরকে একটি বিশেষ সুযোগ করে দেয় এই ‘প্রায়শ্চিত্তকাল’।”
“এই প্রায়শ্চিত্তকালে আমরা যেন আরোও বেশী করে প্রার্থনা, দয়ার কাজ ও উপবাস এর মধ্য দিয়ে যিশুর কাজে আমাদেরকে আরো মনোযোগী, ত্যাগস্বীকার মনোভাব গড়ে তুলতে পারি এবং আমাদের কথাবার্তায়, আচার-আচরণে, ব্যবহারে, চাল-চলনে, পোষাক-আষাকে মার্জিত ফুটে উঠে যিশুময় জীবন। যাতে এরই মধ্য দিয়ে যিশুকে অন্যদের কাছে প্রচার করতে পারি এবং অন্যদের কাছে বাহক হতে পারি”, বলেন ফাদার আন্তনী।
সেন্ট খ্রীষ্টিনা কাথলিক গীর্জার পাল-পুরোহিত ফাদার ডেভিড গমেজ বলেন, “প্রতিবছর ন্যায় আবারও আপনাদেরকে সাধুবাদ জানাই। কারণ এটা সুন্দর দিক যে, আপনারা বিভিন্ন সময়ে অনেক কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও; এই প্রায়শ্চিত্তকালে ধ্যান-প্রার্থনা বিশেষ প্রার্থনানুষ্ঠান ব্যবস্থা করেন। এরই মধ্যে দিয়ে আমরা আরো যিশুর সাথে পথ চলতে পারি। শুধু প্রায়শ্চিত্তকাল নয়; আমরা যেন প্রতিদিনকার জীবনে যিশুকে আমাদের জীবনে, জীবন রাজ্যে জায়গা দিতে পারি।”
পরিশেষে ফাদার ফ্রান্সিস মূর্মু সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “আমরা যেন একেক জন মণ্ডলির বাণী প্রচারে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিতে পারি। ধ্যান-প্রার্থনা, প্রতিদিনকার জীবনে আমাদেরকে আরো সচেতনভাবে জীবন পথে চলতে পারি”। - জের্ভাস মুরমু