কলকাতা জুনিয়রেট বার্ষিক একাডেমিক দিবস উৎযাপন

বিগত ৮ই মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, কলকাতার প্রাণকেন্দ্র থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় অবস্থিত যীশু সংঘ সমাজের ধ্যান-আশ্রমে জুনিয়ারেট বার্ষিক একাডেমিক দিবস উৎযাপন করা হয়।
উক্ত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিশনারিজ অফ চারিটির সিস্টারগণ, লরেটো সিস্টারগণ, আমতলা কে. কর্মেল ফাদারগণ, বাংলা ক্লাসের দিদিমণিরা এবং স্থানীয় ধর্মব্রতী ভাই বোনেরা।
এই অনুষ্ঠানটি উদযাপন করার মূল উদ্দেশ্য ছিল এই এক বছরে জুনিয়াররা যা কিছু শিখেছেন অর্থাৎ ইংলিশ স্পোকেন, জনসংযোগ স্থাপন, গণমাধ্যমের ব্যবহার, তা সকলের সামনে তুলে ধরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিশিষ্ট অতিথিবর্গ ভারতীয় প্রথা অনুযায়ী প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু করেন। এরপর সম্মিলিত ভাষায় প্রভুর প্রার্থনা গানটি পরিবেশন করা হয়। ধ্যান আশ্রমের রেক্টর ফাদার মাসিল্লামনি এসজে স্বাগত বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে আগত সকল অতিথিকে সংবর্ধনা জানান।
এরপর একটি ছোট নাটিকা প্রদর্শন করা হয়। এই নটিকার বিষয়বস্তু ছিল “মহাবিচার”। সেখানে স্বয়ং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে মানুষের সৃষ্ট বিচারালয়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং যদি ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞানী ও সর্ব-কল্যানময় হন, তাহলে তিনি কেন পৃথিবীর বুক থেকে মন্দকে মুছে ফেলেন না?"এই বিষয়ের উপর নাটক পরিবেশিত হয়।
উক্ত এই নাটিকার মধ্যে দিয়ে বোঝানো হয় যে আমরা আমাদের জীবনে নানা রকম ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ এর মধ্যে দিয়ে নিজেরাই নানা রকম বিপদের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে পড়ি এবং তখন আমরা দিশেহারা হয়ে ঈশ্বরের ওপর নানাভাবে দোষারোপ করি এবং ভুলে যাই যে এই কাজটি গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত একান্তভাবেই আমরা নিজেরা গ্রহণ করেছি। সুন্দর এই নাটিকার মধ্যে দিয়ে জুনিয়াররা একটি সুন্দর বার্তা সকলের সামনে তুলে ধরেন।
নটিকার পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যার বিষয়বস্তু ছিল “নারীদের পুরোহিত হিসেবে নিযুক্ত করার অনুমতি দেওয়ার জন্য ক্যাথলিক মন্ডলীর নীতিনিয়ম সংশোধন আবশ্যক কিনা!“
এই “সম-অধিকারমূলক বির্তকের প্রস্তাবনা” বিষয়টি ছিল নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের এক গভীর বহিঃপ্রকাশ। একই সাথে অনুষ্ঠানটিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন ও অনুষ্ঠানে আগত সকল নারীদের সম্মানার্থে যীশু সংঘের ভাইয়েরা একটি গান পরিবেশন করেন এবং আগত সকল মহিলাদের হাতে ফুল দিয়ে তাদের সংবর্ধনা জানান।
সবশেষ সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে দিনের দ্বিতীয় পর্ব শেষ হয় এবং তৃতীয় পর্বে এক প্রীতি ভোজের আয়োজন করা হয়।
সাতটি ভারতীয় যীশু সংঘ প্রদেশ থেকে আগত পনেরজন ভাইয়েরা তাদের প্রশিক্ষকদের সহযোগীতায় দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সচেষ্ট ছিলেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সৃজনশীলতার সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে পরিলক্ষিত হয়।
প্রতিবেদক – ফাদার জেভিয়ার ইনিগো এসজে