অবকাশ বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের বার্ষিক সম্মেলন

বিগত  ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫টায় অবকাশ বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতি ডঃ সাধনা করালির বাসভবনে (বাকেশ্বর, নেপালগঞ্জ রাঘবপুর) অবকাশের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ডঃ সাধনা করালি হলেন সেন্ট পলস উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রাঘবপুরের প্রধান শিক্ষিকা।

১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে, ডঃ সাধনা করালি, ডঃ মধুমিতা আচার্য (বাংলা বিভাগ - সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, রাঘবপুর ক্যাম্পাস), ফাদার ফ্রান্সিস সুনীল রোজারিও (উপদেষ্টা),বাংলাদেশের ডঃ ইসিডোর গোমেস (মাইক্রোবায়োলজি), ফাদার কনৌজ রায় (ভিকার জেনারেল - বারুইপুর ডায়োসিস), ডঃ সুরঞ্জন মিদ্দে (বাংলা বিভাগ - রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়), সুপরিচিত লেখক স্বপন মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট কবি সমরেন্দ্র মণ্ডল,  রাঘবপুর সেন্ট পলস হাই স্কুলের শিক্ষকরা অনুপ গায়েন ও শুভঙ্কর মণ্ডল এবং আরও কয়েকজন বিশিষ্ট লেখক ও কবিগণের উপস্থিতিতে অবকাশ বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের জন্ম হয়।

অবকাশের অন্যতম লক্ষ্য হল রাঘবপুর-নেপালগঞ্জ-কবরডাঙ্গা-ঠাকুরপুকুর অঞ্চল থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে বাংলা সাহিত্য প্রতিভার আবিষ্কার, লালন এবং সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে তাদের সৃষ্টিগুলি তুলে ধরা। এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে, অবকাশ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা বছরে অন্তত একবার তাদের বাংলা পত্রিকা অনুপ্রাস প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেন। ২৩শে ফেব্রুয়ারির সম্মেলনে অবকাশের বাংলা পত্রিকা অনুপ্রাস-এর দ্বিতীয় সংখ্যাটি প্রকাশ করা হয়।

প্রধান অতিথি ফাদার ফ্রান্সিস সুনীল রোজারিও বাংলা সাহিত্য চর্চার সঙ্গে ভারতের অন্যান্য ভাষা যেমন হিন্দি, ঊর্দু, ইত্যাদি ভাষারও সাহিত্যে – Comparative Study - নজর দিতে বলেন। এই বিষয়ে তিনি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বইমেলায় কেনা বেশ কয়েকটি বাংলা এবং হিন্দি বইয়ের নাম তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রচারে পশ্চিমবাংলার ভূমিকা অস্বীকার্য কারণ বাংলা ছাড়া হিন্দি, উর্দু এবং প্রায় সব ভারতীয় ভাষায় লেখা বই ও পত্রিকা প্রথমে বাংলা থেকেই প্রকাশিত হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন সাহিত্যের সমৃদ্ধির জন্য একটি নির্দিষ্ট ভাষার প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার পরিবর্তে, অন্যান্য ভাষার সাহিত্যকর্মকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত কারণ এতে মন আরও উদার হয়। এই উপলক্ষে তিনি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিদ্যাসাগর, প্রেমচাঁদ এবং অন্যান্য লেখকদের রচনা থেকে ব্যাপকভাবে উদ্ধৃতি দেন। এই প্রসঙ্গে তিনি কাওড়াপুকুরের কবরডাঙ্গার নাম পরিবর্তন করে ফাদার দ্যতিয়েন সরণি করার প্রস্তাব দেন।

ডঃ সাধনার বাসভবনে নির্মিত অবকাশ রেফারেন্স লাইব্রেরির জন্য ফাদার সুনীল বাংলাদেশ থেকে আনা একটি বিশেষ বই উপহার দেন। বইটার নাম হলো ``শ্রীমন্ত-বাতে পাদ্রিশিবপুর - ঐতিহাসিক একটি খ্রিষ্টান জনপদ।''  ৭৭২-পৃষ্ঠার প্রচুর পরিসংখ্যান দেওয়া এই বইটি লিখেছেন বাংলাদেশের কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, যোসেফ ডি’রোজারিও এবং ডঃ মেরি মনিকা গোমেস প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ডঃ সাধনা করালি ইতিমধ্যেই রাঘবপুর ধর্মপল্লী সম্পর্কে একটি সমীক্ষা করে বই লিখেছেন এবং এখন তিনি বারুইপুর ধর্মপ্রদেশের জন্য অনুরূপ একটি কাজের পরিকল্পনা করেছেন।

এই অনুষ্ঠানে অবকাশের সভাপতি ডঃ সাধনা করালি কোষাধ্যক্ষ কুমারী ডোনা বরকে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, রাঘবপুর ক্যাম্পাস থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক স্তরে প্রথম হয়ে সোনার মেডেল পাওয়ার জন্য বিশেষ সংবর্ধনা জানান। ডোনা বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করছেন। তৃণমূল স্তর থেকে গভীর সংগ্রাম করে লেখাপড়ায় এত উন্নতি করার জন্য অবকাশের পক্ষ থেকে তাকিয়ে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানানো হয়

প্রতিবেদক - আইজ্যাক হ্যারল্ড গোমেস