ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক আর্মেনিয়ান গীর্জায় অনুষ্ঠিত হল মারীয়ার সেনা সংঘের সভা

ঐতিহাসিক আর্মেনিয়ান গীর্জায় অনুষ্ঠিত হল মারীয়ার সেনা সংঘের সভা

গত ২৮ জুন ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, পুরাতন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক আর্মেনিয়ান গীর্জায় অনুষ্ঠিত হলো  মারীয়ার সেনা সংঘের সভা।

এতে ঢাকা শহরের সমস্ত ধর্মপল্লী থেকে এবং সাভারের ধরেন্ডা ধর্মপল্লী থেকে প্রায় ৭৩ জন সেনা-সংঘের ভ্রাতা-ভগ্নীগণ উপস্থিত ছিলেন।

মারীয়ার সেনা সংঘের বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মিসেস হেলেন গমেজ বর্তমানে কানাডাতে অবস্থান করায় তার স্থানে ভাইস প্রেসিডেন্ট মিসেস ক্যাথরিন গমেজ পবিত্র জপমালা প্রার্থনা ও সভা পরিচালনা করেন।

এই সভায় পবিত্র খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন বাংলাদেশের মারীয়ার সেনা-সংঘের আধ্যাত্মিক পরিচালক ফাদার এলিয়াস পালমা, সিএসসি। তিনি তার উপদেশ বাণীতে বলেন,“জুন মাস যেহেতু পবিত্র যীশু হৃদয়ের মাস, তাই তিনি সভার শুরুতেই দুই-হৃদয়ের অর্থাৎ যীশু-মারীয়ার একটি বড় ছবি বেদীর সামনে রেখে দুই হৃদয়ের ভালবাসার কথা তুলে ধরেন।”

তিনি বলেন, “সাধু লুই মারী মনফর্ট মা মারীয়ার আধ্যাত্মিকতার প্রধান প্রেরণা এবং সেনা-সংঘের প্রতিপালক এর মূল প্রেরণা।”

সাধু লুই মারীর একটি বিখ্যাত উক্তি তুলে ধরে বলেন, “মারীয়ার মধ্য দিয়ে যীশুর কাছে যাত্রা।” তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে, আমরা আমাদের মুক্তিদাতাকে পেয়েছি মা মারীয়ার মধ্য দিয়েঈশ্বর পুএ যীশু এই জগতে প্রবেশ করেছেন কুমারী মারীয়ার মধ্য দিয়ে মানুষ রূপে দেহধারণের মাধ্যমে। তিনি সরাসরি আশ্চর্য্য ভাবে আসতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা করেননি”, বলেন ফাদার এলিয়াস ।

তিনি আরো বলেন, “ধন্যা মারীয়াকেই তিনি বেছে নিয়েছেন, যার মধ্য দিয়ে তিনি এই পৃথিবীতে আসবেন। তাই আমরা যেমন যীশুকে পেয়েছি মা মারীয়ার মধ্য দিয়ে, তেমনি ভাবে আমরা ঈশ্বরের বা যীশুর অনেক আশীর্বাদ পেয়ে থাকি মা মারীয়ার মধ্য দিয়ে। তাই পোপ ১৩শ লিও বলেছেন: “মারীয়ার মধ্য দিয়ে আমরা ঈশ্বরের সমস্ত  কৃপা লাভ করি।”

অংশগ্রহণকারীগণ তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “গীর্জার পরিবেশ আমাদের খুব ভাল লেগেছে। এত সুন্দর পরিবেশ, কত শান্ত!”  পূর্বে যারা এসেছিলেন,  তারাও বলেন “খুব ভাল লাগছে আবার এখানে আসতে পেরে।”

আর্মেনিয়ান গীর্জাটি বাংলাদেশের খ্রীষ্টমন্ডলীর একটি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যপূর্ণ মূল্যবান সম্পদ। এই গীর্জাটি বঙ্গে মঙ্গলসমাচার প্রচার ও খ্রীষ্টমন্ডলীর বিস্তারের এক জীবন্ত সাক্ষ্যী।

এই আর্মেনিয়ান গীর্জাটি নির্মিত হয় ১৭৮১ সালে। ঐতিহ্যবাহী এই গীর্জার সাথে জড়িয়ে আছে ঢাকায় আর্মেনীয়দের ইতিহাস। গীর্জাটি লম্বায় সাড়ে সাতশো ফুট, দরজা চারটি, জানালা সাতটি।

দিনব্যপি এই সভার মধ্যে ছিল রোজারি মালা প্রার্থনা করা,  সেনা-সংঘের ধর্মপল্লী ভিত্তিক রিপোর্ট পাঠ করা, জীবন ভিক্তিক সহভাগিতা করা।

পরিশেষে ফাদার এলিয়াস পালমা, সিএসসি আর্মেনিয়ান গীর্জার কর্তৃপক্ষ ও সেবারত ভাই-বোনদের এবং এই সভায় অংশগ্রহণকারী সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর মধ্যদিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। - ফাদার এলিয়াস পালমা, সিএসসি