বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনী ও এপিসকপাল সদস্যদের নিয়ে ভাটিকানের সংলাপ বিষয়ক দপ্তরের প্রধানদের সাথে সভা

গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ঢাকার মোহাম্মদপুর সিবিসিবি সেন্টারে ভাটিকানের আন্তঃধর্মীয় সংলাপ বিষয়ক দপ্তরের প্রধানদের সাথে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশের সকল বিশপ ও এপিসকপাল সদস্যদের নিয়ে এক বিশেষ সভা।
উক্ত এই সভায় বাংলাদেশের কার্ডিনাল, সকল বিশপ এবং এপিসকপাল সদস্যদের নিয়ে প্রায় ৫০জনের বেশী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতেই ছিল প্রার্থনা অনুষ্ঠান এরপর ভাটিকানের আন্তঃধর্মীয় সংলাপ বিষয়ক দপ্তরের প্রধানদের ফুলের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
এই সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশে আমরা অল্প সংখ্যক কাথলিক থাকা সত্ত্বেও সুন্দ মনোভাব নিয়ে সকল ধর্মের মানুষের সাথে পারস্পারিক সম্প্রীতে সহাবস্থান করছি।
তবে বর্তমান বাস্তবতায় রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকা সত্ত্বেও আমরা একটু ঝুকির মধ্যে বসবাস করছি। বিশেষভাবে উপজাতিদের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অনেক মতোবিরোধ এবং দলাদলির সৃষ্টি হয়েছে,” বলেন বিশপ জের্ভাস রোজারিও।
তিনি আরো বলেন, “এই সংলাপ কমিশনের মধ্য দিয়ে অনেক অনুপ্রেরণামূলক ও উৎসাহমূলক সেমিনারের আয়োজন করা হয় । এছাড়াও আমাদের বিভিন্ন কমিশন গুলো বিশেষভাবে স্কুল, বিভিন্ন এনজিও এবং প্রতিষ্ঠানগুলো সার্বজনীনভাবে সবার মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কাথলিক বিশ্বাসীগণ সবার সাথেই সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।”

ভাটিকানস্থ রাষ্ট্রদূত কেভিন এস. রান্ডাল শুভেচ্ছা বক্তব্যে নুনসিও ইন্দোলিন মুনসিনিয়র মাকুর্স এবং ফাদার ভিক্টরকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেন, “তারা ভাটিকানের আন্তঃধর্মীয় সংলাপের সাথে কাজ করার পূর্বে অনেক পড়াশুনা করেছেন। তিনি নিজে ভাটিকান দফতর থেকে তাদের বাংলাদেশ পরিদর্শন করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কারন প্রথম তিনি নিজে বাংলাদেশে এসেছেন তখন তিনি বাংলাদেশের সংখ্যা গরিষ্টদের সাথে কাথলিকদের কিছু মতোবিরোধ অভিজ্ঞতা করেছেন।”
“তাই বিভিন্ন ধর্মের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভাটিকানের আন্তঃধর্মীয় সংলাপ কমিশনকে বাংলাদেশে আসার জন্য বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রধানের কাছে আহবান জানান। তার জন্য তিনি তাদের বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন,” বলেন কেভিন রান্ডাল।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথী জর্জ কোভাকাদ তার বক্তব্যে বলেন, “সংলাপ আমাদের জন্য একটি খুবই উপকারী বিষয়। সংলাপের গুরুত্ব আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিশেষ প্রভাব ফেলে। সমগ্র জাতির মধ্যে সংলাপের মধ্য দিয়ে মন্ডলী খিস্টকে খুজেঁ এবং অনুসরণ করে শান্তি এবং ভালোবাসার। সংলাপ পরস্পরকে সন্মানবোধ দেখানোর একটি উপায়।”
তিনি প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের কথা উল্লেখ করে বলেন, “সংলাপ ভালোবাসা প্রদর্শন করার একটি উপায় কারণ এটা শান্তির পথ প্রস্তুত করে।” এছাড়া পোপ লিও’র কথা উল্লেখ করে বলেন, “বিভিন্ন ধর্মের সাথে সংলাপের মধ্য দিয়ে ভ্রাতৃত্ববোাধ গড়ে উঠে।”
কার্ডিনাল আরও বলেন, পোপ ফ্রান্সিস যখন বাংলাদেশ সফর করেন তখন তিনি বাংলাদেশের ফাদারদের জন্য বলেছেন বিভিন্ন সেমিনার এবং কমিশনের মধ্য দিয়ে সবার মাঝে মঙ্গলবাণীর আনন্দ সবার কাছে ছড়িয়ে দিতে পারি।
সেমিনারের শেষ পর্যায়ে বিভিন্ন ব্যক্তিগণ সংলাপকে আরো ত্বরানিত্ব করতে সবার কি কি ভূমিকা দরকার সেই বিষয় নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলে ধরেন। এবং সকল প্রশ্নের উত্তর খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন কার্ডিনাল জর্জ এবং তার সফরসঙ্গীগণ।
উক্ত এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন কমিশনের বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। পরিশেষে সিবিসিবি এর সেক্রেটারি বিশপ পল পনেন কুবি সমাপনী বক্তব্যে সকলকে ধন্যবাদ জানানোর মধ্য দিয়ে এই সেমিনারের সমাপ্তী ষোঘণা করেন। - আরভিএ সংবাদ