উদয়নী সোশ্যাল একশন ফোরামের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালন

বিগত ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ, প্রতি বছরের মতো এ বছরও উদয়নী সোশ্যাল একশন ফোরামের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালন করা হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর–১ ব্লকের কলমীখালি গ্রামে, বাবা পঞ্চাননের সংলগ্ন মাঠে সম্পূর্ণা নারী কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এছাড়াও ১১ ডিসেম্বর পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লক ও হুগলি জেলার পান্ডুয়া ব্লকের আদর্শ নারী সংগঠন এবং প্রত্যুষা নারী সংগঠন যৌথভাবে পূর্ব বর্ধমানের সাঁচড়া গ্রামের হাই স্কুল মাঠে মানবাধিকার দিবস পালন করে। ১২ ডিসেম্বর কালনা–১ ও কালনা–২ ব্লকে জাগৃতি নারী কল্যাণ সংগঠন এবং হাতগাছা নারী মুক্তি সংঘের উদ্যোগে কুশোডাঙ্গা ফুটবল মাঠে মানবাধিকার দিবস উদযাপিত হয়।

২০২৫ সালের মানবাধিকার দিবসে রাষ্ট্রসংঘ ঘোষিত দিনটি আমাদের আবারও মনে করিয়ে দেয় অধিকার সুরক্ষার মৌলিক প্রয়োজনীয়তা কী। ২০২৫ সালে মানবাধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল— 'মানবাধিকার: আমাদের প্রতিদিনের জন্য অপরিহার্য'। এই বার্তাটি শুধু একটি থিম নয়। বরং আজকের আন্তর্জাতিক অস্থিরতা এবং অনিশ্চয়তায় ভরা সময়ের এক বাস্তব সত্য।

এই প্রতিপাদ্য আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে মানবাধিকার কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নয়, বরং আমাদের প্রতিদিনের জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত একান্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। মানবাধিকার মানে শুধু দাবি নয়—এগুলো ইতিবাচক, অপরিহার্য এবং অর্জনযোগ্য অধিকার।

খাদ্য, জল, শিক্ষা, নিরাপদ বাসস্থান, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মর্যাদা, স্বাধীনতা ও শান্তি—এই সবকিছুই মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ভিত্তি। আজও মানুষকে এই মৌলিক অধিকারগুলোর জন্য লড়াই করে যেতে হয়। সেই বাস্তব চিত্রই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নারীরা ছোট ছোট নাটক ও গানের মাধ্যমে তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠান চলাকালীন ১১ ও ১২ ডিসেম্বর ছোট ছোট স্টলের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নারীরা নিজেদের হাতে তৈরি বরি, মাশরুমজাত পণ্য, সোলার ল্যাম্পের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদর্শন ও বিক্রি করেন। পাশাপাশি পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকার ও সমস্যার বিষয়েও সংক্ষিপ্ত বার্তা তুলে ধরা হয়।

এছাড়াও ১০ ডিসেম্বর শিশুদের নিয়ে অঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেই সঙ্গে নিজেদের জমিতে উৎপাদিত ফসল এবং হাতে বোনা বিভিন্ন সামগ্রীর প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হয়।

২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য আমাদের স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, মানবাধিকার শুধুই স্লোগান নয়। এটি প্রতিদিনের বাস্তবতা। প্রতিদিন আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কোথাও অধিকার লঙ্ঘিত  না হয় কারণ মানবাধিকার রক্ষা ছাড়া দেশের প্রকৃত গণতন্ত্র ও উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব নয়। তাই মানবাধিকার দিবসে শুধু স্মৃতিচারণ নয়—এটি হোক সম্মিলিত অঙ্গীকার, যাতে পৃথিবীর কোথাও, কোনও মানুষ যেন ভবিষ্যতে আর মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়।

প্রতিবেদন - পারমিতার দত্ত