১১০তম বিশ্বজনীন অভিবাসী ও শরণার্থী দিবস উপলক্ষে পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিসের বার্তা

পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস

আজ ২৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গোটা মন্ডলীজুড়ে পালিত হচ্ছে ১১০তম বিশ্বজনীন অভিবাসী ও শরণার্থী দিবস।

এই দিবসটি উপলক্ষে পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস একটি বার্তা পাঠিয়েছেন যার শিরোনাম ও প্রতিপাদ্য-বিষয় হচ্ছে: ঈশ্বর তাঁর আপন জনগণের সঙ্গে পথ চলেন। যথোপযুক্ত ভাবে এই দিবসটি সর্বত্র পালন করার জন্য পোপ মহোদয়ের নির্দেশনা রয়েছে। 

সাম্প্রতিক কালে সিনড-বিশিষ্ট মন্ডলী বিষয়ে আমরা অনেক ধ্যান ও আলোচনা করে যাচ্ছি এবং সাথে সাথে কিছু কার্যক্রমও হাতে নিয়ে পথ চলছি।  সিনড-বিশিষ্ট মন্ডলীর গঠন-প্রক্রিয়ায় যে কথাটি কেন্দ্রীয় ভাবে আমাদের মনোযোগের মধ্যে আছে তা হল সহযাত্রা, অর্থাৎ আমরা একসঙ্গে যাত্রা করছি, আমরা সবাই সহযাত্রী।  

পোপ মহোদয় আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে বলেন যে, আমরাই শুধু সহযাত্রী নই, ঈশ্বরও আমাদের সঙ্গে সহযাত্রা করেন।  তাই তাঁর বার্তার মূলকথা: “ঈশ্বর তাঁর আপন জনগণের সঙ্গে পথ চলেন”।  

এই কথাগুলো আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় মিশর দেশ থেকে ঈশ্বরের জনগণের সেই মহাযাত্রা যেখানে ঈশ্বর নিজেই তাদের সাথে পথ চলেছেন: মুক্তির উদ্দেশ্যে যাত্রা করার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, জনগণের আর্তনাদ শ্রবণ করেছেন, জনগণের যাকিছু প্রয়োজন তা তিনি দান করেছেন, সকল  বিপদ-আপদ থেকে তিনি তাদের রক্ষা করেছেন, তাদের সাথে মৈত্রী সন্ধি স্থাপন করেছেন এবং যাত্রা শেষে প্রতিশ্রত দেশটি তাদের বসবাসের জন্য দান করেছেন।  

বাংলাদেশের দিকে তাকালে দেখি কত মানুষ নিজের বাসস্থান ছেড়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করছে।  এই দিনে আমাদের স্মরণপটে ভেসে ওঠে মিয়ানমিয়ার থেকে তাড়িত সেই লাখো লাখো রোহিঙ্গা এবং দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক বন্যা-দুর্গত অসংখ মানুষ।

আমাদের মন্ডলীর মধ্যেও দেখি কত খ্রিস্টবিশ্বাসীরা যারা জীবনের নানা তাগিদে একস্থান থেকে স্থানান্তরিত হয়ে আমাদের পাশে এসে বসবাস করছে। ঈশ্বর নিজেই তাদের সাথে পথ চলেছেন।  তারাও আমাদের সাথে সহযাত্রী হয়ে বাস করতে চায়। আমরা কী তাদের সাথে কোন-না-কোন ভাবে সহযাত্রী হতে পারি? 

আজ সকল অভিবাসী ও শরণার্থী মানুষকে স্মরণ করে ঈশ্বরের কাছে আমাদের প্রার্থনা নিবেদেন করে বলি: “খুলে দাও আমাদের চোখ, উদার করো আমাদের হৃদয়। তাদের সাথে আমাদের সাক্ষাৎ যেন হয়ে ওঠে প্রভু যিশুর সাথে আমাদের সাক্ষাৎ।”  - কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি