মথুরাপুর ধর্মপল্লীর অধীনস্থ কাতুলি গ্রামে উদযাপিত হলো সাধু আন্তনীর পর্বোৎসব
গত ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যতায় অনুষ্ঠিত হলো মথুরাপুর ধর্মপল্লীর অধীনস্থ কাতুলি গ্রামে সাধু আন্তনীর পর্বোৎসব।
এই পর্বোৎসব উপল্লক্ষে নয় দিন নভেনা প্রার্থনা, পবিত্র খ্রিস্টযাগ, পাপস্বীকার সংস্কার ও সাধু আন্তনীর বিভিন্ন গুণাবলী ধ্যান করার পর ভক্ত হৃদয়ে বেঁজে উঠেছিল প্রিয় এই গান “সাধু আন্তনী, মোদের প্রতিপালক তুমি”।
পর্বীয় পবিত্র খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন বরিশাল ধর্মপ্রদেশের বিশপ ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও সহ দশজন যাজক, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সিস্টারগণসহ প্রায় ৪০০০ এর বেশি খ্রিস্টভক্ত পর্ব উৎসবে অংশগ্রহণ করেন।
পর্বীয় খ্রিস্টযাগের উপদেশ বাণীতে বিশপ ইম্মানুয়েল বলেন, “ভালোবাসি আমরা সকলেই এই ভালোবাসি শব্দটি শুনতে চাই। যাকে ভালোবাসি তাকে বার বার ভালোবাসি বলি ও তাঁর কাছে ছুটে আসি। ঠিক তেমনি ভাবে আমরা সাধু আন্তনীকে ভালোবাসি বলেই প্রতি বছর এই কাতুলি গ্রামে ছুটে আসি।”
তিনি আরো বলেন, “সাধু আন্তনীর মধ্যস্থতায় আমরা মানোত জানাই, অনেক কৃপা পাই এবং বিশেষভাবে হারানো জিনিস ফিরে পাই। আমি বিশপ হিসেবে বলছি, আমিও সাধু আন্তনীর মধ্যস্থতায় প্রার্থনা করার মধ্য দিয়ে আমার হারানো জিনিস ফিরে পেয়েছি। তাই আমি বলতে চাই, সাধু আন্তনী আমাদের অন্তরে যে বিশ্বাস জন্ম দিয়েছে আমরা যেন সর্বদা এই বিশ্বাস ধরে রাখি, যাতে করে সাধু আন্তনীর মধ্যস্থতায়, তাঁর হাত ধরে আমরা ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করতে পারি।”
কাতুলি গ্রামের খ্রিস্টভক্ত সাগরী গমেজ তাঁর অনুভূতিতে বলেন, “তীর্থ মানে পুণ্য অর্জন, তীর্থ মানে আনন্দ, সকলের মিলন মেলা। আমি সারা বছর অপেক্ষায় থাকি এই দিনটি কবে আসবে। যখন তীর্থ উৎসবের দিন তারিখ ঠিক হয় তখন থেকেই আমার মনের মধ্যে নানান রকম পরিকল্পনা কাজ করতে থাকে।”
তিনি আরো বলেন, “সাধু আন্তনীর তীর্থে এত মানুষের উপস্থিতি, প্রার্থনাময় পরিবেশ আমার মনের বিশ্বাসকে আরো শতগুণ বাড়িয়ে দেয়। নয় দিন নভেনা, বিভিন্ন মিশন থেকে আগত ফাদারদের খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ, পাপস্বীকার আমার আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি বিশেষভাবে সহায়ক হয়েছে।”
“সাধু আন্তনীর অনেক গুণাবলী রয়েছে। এর মধ্যে দয়ালু গুণটি এ বছর আমার ভালো লেগেছে। কারণ এ বছর আমি তাঁর কাছ থেকে অনেক দয়া পেয়েছি। আপনারাও সাধু আন্তনীর মধ্যস্থতায় ঈশ্বরের কাছে বিশ্বাস নিয়ে প্রার্থনা করবেন, দেখবেন এর ফল পাবেনই”, বলেন সাগরী গমেজ।
পবিত্র খ্রিস্টযাগের পর খ্রিস্টভক্তদের মানোত আশির্বাদ, সাধু আন্তনীর পবিত্র কার্ড, সত্য ঘটনার সাক্ষ্য নিয়ে প্রকাশিত অনুগ্রহ পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন, আশির্বাদের চিহ্ন হিসেবে বিস্কুট বিতরণের মধ্য দিয়ে এই পর্বোৎসবের সমাপ্ত করা হয়। - ফাদার উজ্জ্বল রিবেরু