নয়ানগরে ডি’ মাজেনড গির্জা ও সেন্ট ইউজিন স্কুলের সামনে ডাস্টবিন নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন
আজ ২১ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে, নয়ানগর এলাকার ডি’ মাজেনড গির্জা ও সেন্ট ইউজিন স্কুলের সামনে আবর্জনার ডিপো নির্মাণের বিরুদ্ধে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়সহ সচেতন নাগরিকদের উদ্যোগে আজ একটি শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, গির্জা ও খ্রীষ্টান সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ফাদার-সিস্টারগণ এবং বাংলাদেশ ক্যাথলিক স্টুডেন্টস মুভমেন্ট (বিসিএসএম) অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানান, গির্জা শুধু প্রার্থনার স্থান নয়, এটি এলাকার পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার প্রতীক। গির্জা এবং স্কুলের সামনে ডাস্টবিন স্থাপন করলে এটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা ও পরিবেশের সৌন্দর্য ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হবে।
সেন্ট ইউজিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফাদার পিন্টু লুইস কস্তা ওমমআই বলেন, “একটি গির্জা ও স্কুলের সামনে এই ধরনের স্থাপনা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এটি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াবে এবং খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি চরম অবহেলা।”
তিনি আরও বলেন, “চার্চ কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েক দফায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে লিখিতভাবে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন, তবে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।”
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও বলেন, “এই ডিপো নির্মাণ এলাকাবাসীর নানা সমস্যা সৃষ্টি করবে। এটি শুধু খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের নয়, এখানে শিক্ষালাভ করা সকল শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর।”
তিনি প্রশাসনকে অনুরোধ জানান, দ্রুত এই ডিপো অন্যত্র সরিয়ে শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষিত করতে হবে।

মানববন্ধন শেষে অংশগ্রহণকারীরা দাবি জানান যে, আবর্জনার ডিপো যেন এমন স্থানে নির্মাণ করা হয়, যেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকার মানুষদের কোনো ক্ষতি হবে না।
উল্লেখ্য, ডি’ মাজেনড গির্জা ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কেন্দ্র। এটি ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ফ্রান্সের বিশিষ্ট ধর্মযাজক সেন্ট ইউজিন ডি’ মাজেনডের নামে নামকরণ করা হয়েছে। গির্জাটি ওবলেট অফ মেরি ইম্যাকুলেট (OMI) কনগ্রিগেশনের অধীনে পরিচালিত হয় এবং নায়ানগর ও আশেপাশের এলাকায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক, শিক্ষা ও সামাজিক কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। প্রতি রবিবার এখানে প্রায় ২,০০০ হাজার এর অধিক খ্রিস্টভক্ত উপাসনায় অংশ নেন এবং বিশেষ ধর্মীয় দিনে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পায়।