সিলেট ধর্মপ্রদেশ’র ঐশ করুণা ক্যাথিড্রালের শুভ উদ্বোধনী ও আশীর্বাদ অনুষ্ঠান

সিলেট ধর্মপ্রদেশ’র ঐশ করুণা ক্যাথিড্রালের শুভ উদ্বোধনী ও আশীর্বাদ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারীগন

গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দখ্রিষ্টভক্তদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে সিলেট ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের নবনির্মিত ঐশ করুণা ক্যাথিড্রালের  শুভ উদ্বোধন ও আশীর্বাদ অনুষ্ঠান করা হয়। 

নবনির্মিত ঐশ করুণা ক্যাথিড্রালের শুভ উদ্বোধনের মূল বিষয় ছিল, “বিশ্বাস, ঐক্য ও আশীর্বাদের মিলনমেলা”।

সিলেট বিশপ হাউস প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে পোপের প্রতিনিধি আর্চবিশপ কেভিন স্টুয়ার্ট রান্ডাল এবং তার সাথে ছিলেন সিলেট ধর্মপ্রদেশের বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস  গমেজ ।

এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ বিজয় এন. ডি’ক্রুজ, ওএমআই, চট্টগ্রাম মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার, সিএসসি, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও, খুলনা ধর্মপ্রদেশের  বিশপ রমেন বৈরাগী দিনাজপুর ধর্মপ্রদেশের বিশপ সেবািস্টিায়ান টুডু, বিশপ সুব্রত বনিফাস গমেজ ও বিশপ থিওটোনিয়াস গমেজ।

 এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ধর্মপ্রদেশ থেকে আগত ফাদার, ব্রাদার, সিস্টার এবং দেশ বিদেশের বিশিষ্ট অতিথি, দাতাও উপকারী বন্ধুগণ, ও অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মানুষ এ আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

পবিত্র খ্রিস্টযাগের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আশীর্বাদ অনুষ্ঠান যা পরিচালনা করেন বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ। এ সময় ক্যাথিড্রালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয় এবং আশীর্বাদ প্রদান করা হয়।

এর পরপরই আর্চবিশপ, বিশপ, ও অন্যান্য অতিথিরা নতুন ক্যাথিড্রাল পরিদর্শন করেন এবং বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন।

সিলেট ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের নবনির্মিত ঐশ করুণা ক্যাথিড্রাল

অনুষ্ঠানে পোপের প্রতিনিধি আর্চবিশপ কেভিন স্টুয়ার্ট রান্ডাল বলেন, “এই ক্যাথিড্রাল শুধুমাত্র একটি স্থাপনা নয়, এটি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ঐক্য, বিশ্বাস ও সেবার প্রতীক।”

ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ বিজয় এন. ডি’ক্রুজ, ওএমআই বলেন, “ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশের এক অপূর্ব নিদর্শন এই ক্যাথিড্রাল। এটি হবে বিশ্বাস, শিক্ষা ও সমাজসেবার কেন্দ্র।”

চট্টগ্রাম মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার, সিএসসি বলেন, “খ্রিস্টধর্মের আলো ছড়িয়ে দিতে এই ক্যাথিড্রাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি আশীর্বাদস্বরূপ।”

রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, “এই ক্যাথিড্রাল আমাদের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের একতা ও শক্তির প্রতীক।”

খুলনা ধর্মপ্রদেশের  বিশপ রমেন বৈরাগী বলেন, “সেবার চেতনায় এই ক্যাথিড্রাল ভবিষ্যতে অসংখ্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।”

ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের বিশপ সুব্রত বনিফাস গমেজ বলেন, “এটি শুধুমাত্র একটি গির্জা নয়, বরং এটি বিশ্বাস ও ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি।”

উদ্বোধনী ও আশীর্বাদ অনুষ্ঠানের পর অতিথিদের জন্য বিশেষ অভ্যর্থনার আয়োজন করা হয়। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় খ্রীষ্টভক্ত, যুব ও শিশু সদস্যরা সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন।

এই উদ্বোধনী ও আশীর্বাদ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী মারিয়া তার মনের অনুভুতি ব্যক্ত করে বলেন, “আজকে আমরা ঈশ্বরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই তার ভালবাসা ও বিশেষ আশীর্বাদের জন্য কারন আজ আমরা সুন্দর একটা প্রার্থনার স্থান পেয়েছি।”

ধর্মপ্রদেশের একজন খ্রিস্টভক্ত রাফায়েল বলেন, “ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও বিশ্বাসকে আরও গভীর করার জন্য এই ঐশ করুণা ক্যাথিড্রাল আমাদের সিলেট ধর্মপ্রদেশের খ্রিস্টভক্তদের জন্য এক বিশেষ উপহার।”

এই মহতী অনুষ্ঠানে সিলেট ধর্মপ্রদেশের বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ অংশগ্রহণকারী সকল খ্রীষ্টভক্ত, দাতা, উপকারী বন্ধু, অতিথি এবং আয়োজক কমিটির সদস্যদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

সিলেট  ধর্মপ্রদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়,  ভবিষ্যতে এই ক্যাথিড্রাল শুধুমাত্র উপাসনার স্থান নয়, বরং শিক্ষা,  মানবসেবা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করবে। - ফাদার লুইস সাগর রোজারিও, ওএমআই