৫৯তম বিশ্ব যোগাযোগ দিবস উপলক্ষে পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিসের বাণী “তোমাদের হৃদয়ের আশা নম্রতার সাথে সহভাগিতা কর”

৫৯তম বিশ্ব যোগাযোগ দিবস

প্রিয় ভাই-বোনেরা,

আমাদের, বর্তমান সময়ে, অপপ্রচার ও মেরুকরণ বৈশিষ্ট্যযুক্ত উপাত্ত ও তথ্যের বিশাল ভাণ্ডারকে নিয়ন্ত্রণ করে কেউ কেউ ক্ষমতার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তোমরা সংবাদকর্মী ও যোগাযোগকারীরা যারা এই সম্বন্ধে সচেতন তোমাদেরকে আমি বলতে চাই তোমাদের কাজ আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি। বস্তুতপক্ষে যোগাযোগের কেন্দ্রে জনগণের প্রতি তোমাদের ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক দায়িত্ব পালনের সাহসী প্রচেষ্টা অত্যন্ত প্রয়োজন।

এই সমস্যাযুক্ত সময়ে অনুগ্রহের মুহূর্তরূপে এই বছর জুবিলী উদ্যাপনে আমার চিন্তা-বাণীতে তোমাদের আহ্বান জানাচ্ছি ‘আশার যোগাযোগকারী’ হতে, মঙ্গলসমাচারের মনোভাবে তোমাদের কাজ ও মিশন নবায়ন করা শুরু করতে।

নিরস্ত্রীকরণ যোগাযোগ

বর্তমানে গণমাধ্যম প্রায়ই আশার বাণী না শুনিয়ে, ভয় ও হতাশা, কুসংস্কার, বিরক্তি, ধর্মান্ধতা, এমনকি ঘৃণার জন্ম দেয়। সবকিছু প্রায়শই সহজাত প্রতিক্রিয়া জাগানোর বাস্তবতা সহজ করে তোলে। তা করতে অনেক সময় ক্ষুরধার শব্দ ব্যবহার করে; যোগাযোগের মাধ্যমগুলো মিথ্যা ও শৈল্পিকভাবে বিকৃত তথ্য ব্যবহার করে জনগণকে উত্তেজিত ও উস্কে দেয় এবং আঘাত করে। কতিপয় স্থানে, আমি যোগাযোগকে ‘নিরস্ত্রীকরণ’ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলেছি এবং তা যেনো আক্রমণাত্মক না হয়ে পরিশুদ্ধ হয় সে বিষয়ে বলেছি। কারণ এই ধরণের যোগাযোগ কখনোই বাস্তবতাকে সাহায্য করে না। আমরা সবাই দেখি, কিভাবে টেলিভিশন টকশো থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যমে মৌখিক আক্রমণের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতা, বিরোধিতা, আধিপত্য বিস্তার, অনধিকার চর্চা এবং জনমতের হেরফেরগুলো আরো স্পষ্ট কওে তোলে।

অন্য একটি উদ্বেগজনক ঘটনা রয়েছে: যা আমরা ‘মনোযোগের প্রোগ্রামযুক্ত বিচ্ছুরণ’ বলতে পারি যা ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাজারের যুক্তি অনুসারে প্রোফাইলিং করে, বাস্তবতা সম্পর্কে আমাদের ধারণা পরিবর্তন করে। ফলশ্রুতিতে, আমরা সাক্ষ্য দেই প্রায় অসহায়ভাবে, স্বার্থের পরমানুকরণ যা শেষ হয় সমাজ হিসাবে আমাদের অস্তিত্বের ভিত্তিকে অবমূল্যায়নে, সাধারণ কল্যাণের সাধনায় যোগ দিতে আমাদের সামর্থতায়, অন্যের কথা শোনা ও অন্যের মতামত বুঝতে।

শত্রু’ সনাক্ত করে আঘাত করা আত্মপ্রতিষ্ঠা করার অবিচ্ছেদ্যরূপে প্রতিভাত হয়। তথাপি, যখন অন্যেরা আমাদের ‘শত্রুতে’ পরিণত হয়, আমরা তাদের স্বতন্ত্রতা ও মর্যাদা অবজ্ঞা করি তাদেরকে উপহাস ও ঠাট্টা করার জন্য, এভাবে আমরাও আশা সৃষ্টির সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলি। ঠিক যেমন ডন তনিনো বেল্লো (উড়হ ঞড়হরহড় ইবষষড়) পর্যবেক্ষণ করেন যে, সকল দ্বিধা-বিরোধ ‘শুরু হয় যখন স্বতন্ত্র মুখগুলো দ্রবীভূত ও অদৃশ্য হয়ে যায়। এ ধরণের চিন্তাধারায় আমাদের আত্মসমর্পণ করা ঠিক নয়।

আশা, বস্তুতপক্ষে, সহজ বিষয় নয়। ফরাসি লেখক ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক জর্জেস বার্নানোস বলেছিলেন, “কেবলমাত্র তারাই আশা করতে সক্ষম যারা মায়া ও মিথ্যাকে অস্বীকার করতে পারে”। আশা একটি ঝুঁকি, যা অবশ্যই নিতে হবে। এটি ঝুঁকিগুলোর ঝুঁকি। আশা লুকায়িত গুণ, যা দৃঢ় ও ধৈর্যপূর্ণ। খ্রিস্টানদের জন্য আশা বিকল্প নয়, বরং প্রয়োজনীয় একটি শর্ত। পোপ ১৬শ বেনেডিক্ট তার ঝঢ়বং ঝধষার (আশার পরিত্রাণ) প্রৈরিতিক পত্রে বলেন, আশা নেতিবাচক নয়, বরং ইতিবাচক ও কর্মক্ষম। কর্মক্ষম গুণটি আমাদের জীবন পরিবর্তনে সক্ষম। যার আশা আছে সে ভিন্নভাবে বাস করে; যে আশা করে তাকে নতুন জীবনের দান দেওয়া হয়েছে।

আমাদের মধ্যকার আশাকে কোমলতার সাথে বিবেচনা

১ম পিতর পত্রে (৩:১৫-১৬) আমরা প্রশংসনীয় সারাংশ পাই যেখানে আশা খ্রিস্টীয় সাক্ষ্যদান ও যোগাযোগের সাথে সংযুক্ত। তোমাদের হৃদয়ে প্রভুর অর্থাৎ খ্রিস্টের জন্য পেতে রাখো শ্রদ্ধার আসন। অন্তরে যে আশা পোষণ করছ, সেই আশার ভিত্তিটা কি, কেউ তা জানতে চাইলে নম্রভাবে ও সমুচিত সম্মান দেখিয়ে উত্তর দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকো। এই বাণী থেকে আমি ৩টি বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই।

তোমাদের হৃদয় প্রভুর অর্থাৎ খ্রিস্টের জন্য পেতে রাখো শ্রদ্ধার আসন’- খ্রিস্টানদের আশার একটি মুখমণ্ডল রয়েছে, তা হলো পুনরুত্থিত প্রভুর মুখ। পবিত্র আত্মার দানের মাধ্যমে আমাদের সাথে সর্বদা তার থাকার অঙ্গীকার; সকল আশার বিরুদ্ধে আশা করতে এবং যখন মনে হয় সবকিছু যেন হারিয়ে গেল, সেখানে মঙ্গলময়তার নীরব উপস্থিতি উপলব্ধি করতে সক্ষম করে তোলে।

দ্বিতীয় বার্তাটি হলো আমাদের মধ্যকার আশা ব্যাখ্যা করতে প্রস্তুত থাকা উচিত। এটা তাৎপর্যপূর্ণ যে, সাধু পিতর বলছেন যে বা যারা জানতে চায় তাদেরকে যেন আমরা আশার ভিত্তির উত্তর দিতে প্রস্তুত থাকি। খ্রিস্টানগণ প্রাথমিকভাবে সেই জনগণ নয় যারা ঈশ্বর সম্পর্কে বলে কিন্তু যারা তার ভালোবাসার সৌন্দর্য ও সবকিছু অভিজ্ঞতা করার নতুন পথ অনুরণিত করে। এটা তাদের ভালোবাসার বসবাস যা প্রশ্নের উদ্রেক করে ও উত্তরের আহ্বান জানায়: কেন তুমি এভাবে বসবাস করছ? কেন তুমি এমন?

সাধু পিতরের কথায়, আমরা তৃতীয় যে বার্তা পাই: প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে নম্রভাবে ও সমুচিত সম্মান দেখিয়ে। খ্রিস্টীয় যোগাযোগ, আমি বলবো, সকল যোগাযোগ অবশ্যই ভদ্রতা ও ঘনিষ্ঠতায় নিমজ্জিত হওয়া উচিত। ঠিক সেই এম্মাউসের পথে সঙ্গীদের মত। সকল সময়ের শ্রেষ্ঠ যোগাযোগকারী, নাজারেথের যিশুর প্রক্রিয়া তাই ছিল যিনি এম্মাউসের পথে দু’জন শিষ্যের সাথে হেঁটে চলেছিলেন, তাদের সাথে কথা বলেছিলেন এবং শাস্ত্রের অর্থ এমন বিশদভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন যে তাদের মনের ভিতরে একটি আগুন জ¦লছিল।

আমি এমন একটি যোগাযোগ ধারার স্বপ্ন দেখি যা আমাদেরকে সহযাত্রী করে তুলবে, আমাদের ভাই-বোনদের পাশাপাশি হাঁটবে এবং এই সংকটপূর্ণ সময়ে তাদেরকে আশায় উৎসাহিত করবে। একটি যোগাযোগ ধারা যা প্রতিরক্ষামূলকতা ও ক্রোধসমূহের আবেগপূর্ণ প্রতিক্রিয়ার উত্তেজনা নয় বরং উন্মুক্ততা ও বন্ধুত্বের মনোভাবে সমর্থ হয়ে হৃদয়ের কথা বলবে। যোগাযোগ এমনকি দৃশ্যতঃ বেপরোয়া অবস্থার মধ্যেও সৌন্দর্য ও আশার উপর ফোকাস করার সক্ষমতা এবং অন্যদের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা, সহানুভূতি ও উদ্বেগ সৃষ্টি করে। এমনই যোগাযোগ যা “প্রত্যেক ব্যক্তির মানবীয় মর্যাদার স্বীকৃতি এবং আমাদের একই বাসস্থানের জন্য যত্ন করতে একসাথে কাজ করবে” (উঊখঊঢওঞ ঘঙঝ, ২১৭= তিনি আমাদের ভালবেসেছেন, নং ২১৭)।

আমি এমন একটি যোগাযোগের স্বপ্ন দেখি যা বিভ্রম বা ভীতির সঞ্চার করে না, কিন্তু আশার জন্য যুক্তি দিতে সক্ষম হয়। মার্টিন লুথার কিং একবার বলেছেন, “আমার চলার পথে কাউকে যদি সাহায্য করতে পারি, কোন কথা বা গান দিয়ে উৎফুল্ল করতে পারি... তাহলে আমার জীবন বৃথা হবে না। এটা করার জন্য, যদিও আমাদেরকে আত্ম-প্রচার ও আত্মমগ্নতার ব্যধি থেকে সুস্থ হতে হবে এবং আমাদের কণ্ঠ অন্যদের শোনানোর জন্য চিৎকার করার ঝুঁকি এড়িয়ে যেতে হবে। একজন ভালো যোগাযোগকারী নিশ্চিত করে যে সে অবশ্যই অন্যের কথা শুনে, কাছে আসে এবং ঘনিষ্ঠ হতে পারে। এরূপ যোগাযোগ ‘আশার তীর্থযাত্রী’ হতে সাহায্য করে, যা বর্তমান জুবিলীর প্রতিপাদ্য বিষয়।

একসাথে আশা করা

আশা সর্বদা একটি সমাজ উন্নয়ন পরিকল্পনা। কিছু সময়ের জন্য আমরা এ বছরের অনুগ্রহ বর্ষের প্রদত্ত মহানুভবতার কথা স্মরণ করি। আমরা আমন্ত্রিত সবাইÑ আমরা আবারও আরম্ভ করি, ঈশ্বর আমাদের উত্তোলন করুন, তিনি আমাদের আলিঙ্গন করুন ও তার করুণাধারা বর্ষণ করুন। এই বিষয়ে, ব্যক্তিগত ও সামাজিক দিকসমূহ অবিচ্ছেদ্যভাবে সংযুক্ত : আমরা একসাথে শুরু করি, আমাদের অনেক ভাই-বোনদের পাশাপাশি আমরা যাত্রা করি এবং আমরা একসাথে পুণ্য দ্বার দিয়ে পার হই।

জুবিলীর সামাজিক অনেক প্রভাব আছে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা চিন্তা করতে পারি কারাগারে থাকা বসবাসকারীদের জন্য করুণা ও আশার বাণী অথবা যাতনাভোগকারীদের ও প্রান্তিক জনগণের প্রতি ঘনিষ্ঠতা ও কোমলতার আহ্বান। জুবিলী স্মরণ করায় যারা শান্তি-স্থাপন করে, “তারাই ঈশ্বরের সন্তান বলে পরিচিত হবে” (মথি ৫:৯)। এবং এইভাবে এটি আশাকে অনুপ্রাণিত করে ও মনোযোগী, মৃদু ও প্রতিফলিত যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তার দিকে নির্দেশ করে; আর এগুলো সংলাপের পথ নির্দেশ করতে সক্ষম। এই কারণে আমি তোমাদের সোনা-অনুসন্ধানকারীদের মতো অক্লান্তভাবে বালি ছেঁকে সোনার টুকরো বের করার মতো খবরের ভাঁজে লুকিয়ে থাকা ভালো গল্প আবিষ্কার ও প্রকাশ করতে অনুপ্রাণিত করছি। আশার বীজ অনুসন্ধান করে তা জানানো একটি ভালো কাজ। কেননা তা দরিদ্রদের কান্নায় কম বধির হতে, কম উদাসীন হতে, নিজের প্রতি কম আবদ্ধ হতে আমাদের বিশ্বকে সাহায্য করে। তোমরা সর্বদা মঙ্গলময়তার এই ঝলকানি খুঁজে পাও যা আমাদেরকে আশায় অনুপ্রাণিত করে। এই ধরনের যোগাযোগ সংহতি নির্মাণে, নিজেদেরকে কম নিঃসঙ্গ অনুভব করতে, একসাথে পথচলার গুরুত্ব পুনঃআবিষ্কার করতে সাহায্য করতে পারে।

অন্তরকে ভুলে যেওনা

প্রিয় ভাই-বোনেরা, প্রযুক্তির বিষ্ময়কর উৎকর্ষতার সময়ে আমি তোমাদেরকে অনুপ্রাণিত করছি, তোমাদের অন্তর ভিতরকার জীবনের যত্ন নিতে। এর মানে কি? আমাকে কয়েকটি অনুচিন্তুন দিতে দাও;

# বিনয়ী হও এবং কখনও অন্যদের কথা ভুলে যেওনা; নারী-পুরুষ যাদের সাথে তুমি সেবা কাজ করে যাচ্ছ তাদের অন্তরে কথা বলো। 

# তোমাদের আবেগ দ্বারা যোগাযোগকে পরিচালিত হতে দিও না। সব সময় আশা ছড়িয়ে দাও; এমনকি যখন জীবন কঠিন সমস্যায় নিমজ্জিত এবং শুভফল আসে না তখনও নিরাশাগ্রস্থ হ’য়ো না।

# এমন যোগাযোগ প্রচার করো যা আমাদের মানবতার ক্ষতসমূহ সারিয়ে তুলতে পারে।

# অপ্রতিরোধ্য ফুলের মতো হৃদয়গ্রাহী বিশ্বাসের প্রতি গুরুত্বারোপ কর। জীবন ধ্বংসকারীর কাছে নতিস্বীকার করো না, বরং অপ্রত্যাশিত জায়গায় প্রস্ফুটিত হয়ে বেড়ে উঠো। আশায়পূর্ণ মায়েদের মতো হতে হবে, যে মা প্রতিদিন প্রার্থনা করে যেন তার সন্তান সংঘাত থেকে ফিরে আসে। উন্নত জীবনের আশায় ঝুঁকি নিয়ে যে বাবা দেশ ত্যাগ করে সেই বাবার মতো আশা থাকতে হবে। আমাদেরও হতে হবে যুদ্ধাক্রান্ত শিশুদের মতো যারা যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের মধ্যে যে কোনভাবে রাস্তায় খেলতে, হাসতে এবং জীবনে বাঁচার পথ খুঁজে বের করতে সক্ষম।

# অনাক্রমণাত্মক যোগাযোগের সাক্ষী ও প্রচারক হও; যত্নের কৃষ্টি বিস্তারে সাহায্য করো, সেতু নির্মাণ করো এবং বর্তমান সময়ের দৃশ্য-অদৃশ্য প্রাচীর ভেঙ্গে দেও।

# আশায় প্লাবিত ঘটনাগুলো বা আশার গল্পগুলো বলো, আমাদের সবার সাধারণ লক্ষ্য সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হও এবং আমাদের ভবিষ্যত ইতিহাস একসাথে লেখার জন্য প্রচেষ্টা নাও।

ঈশ্বরের অনুগ্রহে জুবিলী বর্ষে আমরা একত্রে এই সকল কাজ বাস্তবায়ন করতে পারি। আর এটাই হলো আমার প্রার্থনা। তোমাদের প্রত্যেককে ও তোমাদের কাজকে আমি আশীর্বাদ করি।

পোপ ফ্রান্সিস

সাধু যোহন লাতেরান বাসিলিকা, রোম, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সাধু ফ্রান্সিস দ্যা স্যালেস-এর স্মরণ দিবস

ভাষান্তর: ফাদার প্রশান্ত থিওটোনিয়াস রিবেরু ও ফাদার সাগর কোড়াইয়া