চড়াখোলা গ্রামের স্বর্গোন্নীতা রাণী মারীয়া গীর্জার শুভ উদ্বোধন ও আশীর্বাদ অনুষ্ঠান

গত ৩ জানুয়ারী ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, তুমিলিয়া ধর্মপল্লীর  চড়াখোলা গ্রামে স্বর্গোন্নীতা রাণী মারীয়ার গীর্জার শুভ উদ্বোধন ও আশীর্বাদ করা হয়।

এই নতুন গীর্জা উদ্বোধন ও আশীর্বাদ করেন ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আর্চবিশপ বিজয় এন ডিক্রুজ, এছাড়াও আশীর্বাদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডিরোজারিও, ঢাকাস্থ ভাতিকানের রাষ্ট্রদূত কেভিন রান্ডাল, ঢাকার সহকারি বিশপ সুব্রত গমেজ, বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত নিনা পাদিলা কেইংলেট তুমিলিয়া ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার যাকোব সহ অন্যান্য ফাদার,ব্রাদার, সিষ্টার ও বিভিন্ন ধর্মপল্লী থেকে আগত প্রায় ৩৫০০ জন খ্রিস্টভক্ত।

বিশপ মহোদয়ের উদ্বোধনী ভূমিকা,  ফিতা কাটা,  চাবি হস্তান্তর পর্ব,  স্মৃতি ফলক উম্মোচন গির্জার মূল ফটক খোলার মধ্য দিয়ে গীর্জার ভেতরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে নতুন গির্জায় খ্রিষ্টযাগ অপর্ন করা হয়।

নতুন গির্জা আশীর্বাদ অনুষ্ঠানের বিশেষ কয়েকটি দিকের মধ্যে ছিল; পবিত্র জল সিঞ্চন, ধূপনক্রিয়া, আলোক প্রজ্জ্বলনক্রিয়া উক্ত গীর্জার প্রতিপালিকা স্বর্গোন্নীতা রাণী মারীয়া প্রতিকৃতি স্থাপন।

পবিত্র খ্রিস্টযাগের প্রধান পৌরহিত্যকারী আর্চবিশপ বিজয় এন ডিক্রুজ তাঁর উপদেশ বাণীতে বলেন, আমরা নিজেরাই যেন একেকজন রক্তমাংসের  গীর্জা হয়ে উঠি। সিনডাল মণ্ডলী আমাদের শিক্ষা দেয়, মণ্ডলী ও গীর্জা এমনই একটি স্থান, যেখানে ঈশ্বর ও মানুষের মিলন হয়েছে। আমরা যখন গীর্জায় আসি তখন আমদের স্মরণ করতে হবে আমরা সবাই ঈশ্বরের সন্তান। আমাদের মধ্যে মিলন ও একাত্মতা মধ্য দিয়েই আমরা হয়ে উঠবো পরস্পরের আপন ভাইবোন।

তিনি আরও বলেন, গীর্জা স্থাপনের মধ্য দিয়ে চড়াখোলা গ্রামবাসীর দায়িত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সবাই মিলে এই নতুন গির্জার যত্ন  নিতে হবে এবং অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে গ্রামবাসীকে আরও উদার হওয়ার আহ্বান জানান।

খ্রীষ্টযাগের পরে নতুন গির্জার আশীর্বাদ উপলক্ষে স্মরণীকার মোড়ক উন্মোচন করেন উপস্থিত বিশপ, ফাদার অতিথিবৃন্দ । এর পরপর বেলুন ও কবুতর অবমুক্ত করা হয়।

দিনব্যাপি অনুষ্ঠানের মধ্যে আরও ছিলো ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা অনুষ্ঠান ও প্রামাণ্য চিত্র পরিবেশনা ও গ্রামবাসীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।

উল্লেখ্য, চড়াখোলা প্রবাসী কল্যাণ সমিতি, কুয়েত এর সদস্যগণ প্রথম স্বপ্ন দেখেছিলেন চড়াখোলা গ্রামের গীর্জা স্থাপনের। তাদের অর্থায়নেই  ১৯৯৮ খ্রীষ্টাব্দে চড়াখোলা গীর্জার জন্য প্রথম ৫৭ (সাতান্ন) শতক জমি ক্রয় করা হয়। পরবর্তিতে বিভিন্ন দাতাগণের অর্থায়নে স্থাপন হয় নতুন এই গীর্জাটি।

২০২১  খ্রীষ্টাব্দের ১২ অক্টোবর ‘স্বর্গোন্নীতা রাণী মারীয়া গীর্জানির্মাণ কাজের  শুভ সূচনা করেন পরম শ্রদ্ধেয় আর্চবিশপ বিজয় এন ডিক্রুজ ওএমআই। বর্তমানে গীর্জার মোট জমির পরিমান আট বিঘা।

 - রিপন আব্রাহাম টলেন্টিনু