রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের লক্ষণপুর ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত হল ডিকন বিনেশ মার্টিন তিগ্যার যাজকীয় অভিষেক লাভ অনুষ্ঠান
গত ২২ নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের লক্ষণপুর ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত হলো ডিকন বিনেশ মার্টিন তিগ্যার যাজকীয় অভিষেক লাভ অনুষ্ঠান।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও, ভিকার জেনারেল ফাদার ফাবিয়ান মার্ডী ও লক্ষণপুর ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার সমর সেবাস্টিয়ান দাংগ সহ বিভিন্ন ধর্মপল্লী থেকে আগত ৩৭জন ফাদার, ২জন ডিকন, ১৫ জন সিস্টার এবং প্রায় ১০০০জন এর অধিক খ্রিস্টভক্তগণ।
খ্রিস্টযাগের উপদেশ বাণীতে বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, “যাজক হচ্ছেন মঙ্গলবাণীর একজন সেবক, ঘোষক, শিক্ষক ও প্রেরিতদূত। সে প্রতিটি মুহুর্তে নিজেকে এই পবিত্র কাজের জন্য যোগ্য করার লক্ষ্যে মহাযাজক প্রভু যিশুর আদর্শ ও জীবনকে অনুসরণ করে।”
“যাজকীয় জীবনে নিজে পবিত্র থেকে ও অন্যদের পবিত্র করে, মঙ্গলবাণী নিজে পালন করে ও তা প্রচার করে, খ্রিস্টের নেতৃত্ব গ্রহণ করে ও সেই নেতৃত্বের সেবা দিয়ে যাজক মঙ্গলবাণীর সেবা করে”, বলেন বিশপ রোজারিও ।
তিনি আরো বলেন, “বর্তমান জগতে যাজকীয় জীবন ও সেবাকাজ অনেক বেশী চ্যালেঞ্জপূর্ণ। যাজকীয় জীবনে জগতের প্রভাব অনেক বেশী। জাগতিকতার মধ্যে বাস করেও জাগতিকতার উর্ধ্বে থাকতে হয়। তাই এই চ্যালেঞ্জকে জয় করার জন্য যাজককে যিশুর সাথে গভীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক, ভক্তি ও ভালবাসা, যিশুর প্রতি গভীর আনুগত্য ও বাধ্যতা এবং মঙ্গলসমাচারের মূল্যবোধের প্রতি বিশ্বস্ততা রাখতে হয়।”
নব অভিষিক্ত ফাদার বিনেশ তিগ্যা তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “আজ আমার জীবনের জন্য এক অতি আনন্দের দিন। এই মিলন যজ্ঞে আমি মঙ্গলময় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই কারণ তাঁর ঐশ পরিকল্পনায় আমি এই পৃথিবীতে এসেছি। পুণ্যবেদীতে তাঁর পুত্রের মহাযাজকত্বে অংশী হতে তিনি আমাকে আহ্বান করেছেন, যেন পুণ্য যজ্ঞানুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারি।”
“আমি অযোগ্য হওয়া সত্বেও ঈশ্বর আমাকে তার কাজে মনোনীত করেছেন। এই জীবনে আসার জন্য যাদের অকৃত্রিম ভালবাসা, সেবা যত্ন, শাসন, সুশিক্ষা, উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা, যথেষ্ট ত্যাগ-স্বীকার এবং অনবরত প্রার্থনায় আমি আজ যাজক হিসেবে বেদীতে দাঁড়াতে পেরেছি”, বলেন ফাদার তিগ্যা ।
লক্ষণপুর ধর্মপল্লীর গ্রাম প্রধান যুগোল এক্কা তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “নিঃসন্দেহে ফাদার বিনেশের উদ্যোগটা অতি মহৎ। কারণ ফাদার তো যেমন তেমন লোক হতে পারে না, এটা তো সাধনার ব্যাপার। এটা আমাদের জাতি হিসেবেও গর্বের বিষয়।”
লক্ষণপুর ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার সমর সেবাস্টিয়ান দাংগ বলেন, “ফাদার বিনেশ একজন অভিষিক্ত যাজক হিসেবে এই জগতে ঈশ্বরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং ঐশ জনগণের সেবাতে নিজেকে নিবেদন করেছেন।”
“তিনি যেহেতু বর্তমানে সাধু ইউজিন ধর্মপল্লীর অন্তর্গত শিহাড়া গ্রামের সন্তান, তাই ধর্মপল্লীর সকল খ্রিস্টভক্তদের জন্য এটি একটি আনন্দ ও আশীর্বাদ এবং মণ্ডলীর জন্যেও বড় আনন্দ”, বলেন ফাদার সমর দাংগ।
আমরা বিশ্বাস করি, তিনি তার এই যাজকীয় জীবনে সকল বাধা ও প্রলোভনকে জয় করে ঈশ্বরের উপর নির্ভরশীল হয়ে তার সেবার কাজ করে যেতে পারবেন। - আরভিএ সংবাদ