রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় কাটেখ্রিস্ট ও প্রার্থনা পরিচালকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হল দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক সেমিনার
গত ২০ থেকে ২৩ জুন ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ক্যাটিক্যাটিকাল ও বাইবেল বিষয়ক কমিশনের আয়োজনে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো কাটেখ্রিস্ট মাস্টার ও প্রার্থনা পরিচালকদের দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক সেমিনার।
এতে বিভিন্ন ধর্মপল্লী থেকে প্রায় ৪০ জন প্রার্থনা পরিচালক, কাটেখ্রিস্ট মাস্টার এবং সিস্টার অংশগ্রহণ করেন।
বিশপ জেভার্স রোজারিও কোর্সে অংশগ্রহণকারী কাটেখ্রিস্ট মাস্টার, প্রার্থনা পরিচালক এবং সিস্টারদের উদ্দেশ্যে পবিত্র খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন ।
তিনি তাঁর উপদেশে বলেন, “আমরা ঈশ্বরের জন্য কাজ করি বলে আমাদের জীবনে অনেক সময় নির্যাতন ও তিরস্কার আসতে পারে। তবে তা নিয়ে যেন আমরা ভয় না করি বরং আমরা যেন সর্বদা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে চেষ্টা করি। আর এই বিশ্বস্ততার মধ্যদিয়েই আমরা ঈশ্বরের রাজ্য বিস্তারের জন্য কাজ করতে সক্ষম হব।”
তিনি আরো বলেন, “আপনারা প্রার্থনা পরিচালক এবং কাটেখ্রিস্ট মাস্টারগণ মণ্ডলিতে ফাদারদের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আপনারা চেষ্টা করবেন আপনাদের স্ব স্ব স্থানে থেকে নিজেদের উপরে অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে। এই কাজ করতে কষ্ট হয় তা জানি তবুও আপনারা যদি এই বাণী প্রচারের কাজে বিশ্বস্ত থাকেন তাহলে ঈশ্বরই আপনাদেরকে পুরস্কৃত করবেন।”
এই সেমিনারে বিভিন্ন বিষয়ের উপরে শিক্ষা দেয়া হয় যথা, একজন প্রার্থনা পরিচালক বা কাটেখ্রিস্ট মাস্টার কে? তার প্রধান কাজ ও বৈশিষ্ট্য কি হবে? মণ্ডলি কি? সাক্রামেন্তের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা এবং একজন কাটেখ্রিস্ট মাস্টার ও প্রার্থনা পরিচালকের প্রধান কাজ কী কী? মাণ্ডলিক আইনে বিবাহ কী? মিশ্র বিবাহ কাকে বলে ? বিবাহের বাধা ও সমাধানের প্রক্রিয়াসমূহ সম্পর্কে ক্লাস দেওয়া হয়
সেমিনারে অংশগ্রহণকারী মার্জিনা টুডু তার অনুভূতি ব্যাক্ত করে বলেন, “এই প্রশিক্ষণে আসতে পেরে আমার খুব ভাল লেগেছে । কারণ এখানে এসে আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। একজন প্রার্থনা পরিচালক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য কি সে সম্পর্কে জানতে পেরেছি।”
“তাছাড়া প্রার্থনা পরিচালনার কায়দা কৌশল সম্বন্ধে অবগত হয়েছি। প্রতি বছর এই ধরণের কোর্সের বা সেমিনারের আয়োজন করলে আমাদের প্রার্থনা পরিচালকদের জন্য অনেক ভাল হবে বলে মনে করি”, বলেন মার্জিনা টুডু।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারী যোহন বেশরা বলেন, “এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করে আমার হৃদয়-মন-আত্মায় অনেক উদ্দীপনা পেলাম। আমি মনে করি, একজন প্রার্থনা পরিচালক হিসেবে সব সময় আমার গ্রামের খ্রিস্টভক্তদের নিয়ে ভাবতে হবে, তাদের জন্য ভাল কিছু করার তাগিদ অনুভব করতে হবে।”
“জনগণকে ঈশ্বরের দিকে অগ্রসর করার জন্য যথেষ্ঠ প্রস্তুতি নিয়ে নিয়মিতভাবে এবং নিষ্ঠার সাথে প্রতি রবিবার রবিবাসরীয় প্রার্থনা অনুষ্ঠান করতে হবে”, বলেন যোহন।
খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রের পরিচালক ফাদার বাবলু কোড়াইয়া বলেন, “আমাদের ধর্মপ্রদেশের মধ্য ও উত্তর ভিকারিয়ায় ধর্মপল্লীর গ্রামগুলি মিশন কেন্দ্র থেকে দূরে অবস্থিত বলে প্রতি রবিবার আমাদের ফাদারগণ প্রত্যেকটা গ্রামে খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করতে পারেন না। সেই ক্ষেত্রে আপনারাই আমাদের খ্রিস্টবিশ্বাসীদের আধ্যাত্মিক যত্ন নিয়ে তাদের খ্রিস্টবিশ্বাস টিকিয়ে রাখার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।”
ফাদার বাবলু কোড়াইয়া আরো বলেন, “আশা করি, আপনাদের এই বিশ্বাসপূর্ণ সেবাকাজ আমাদের স্থানীয় মণ্ডলি গঠনে আরো সহায়ক ভূমিকা রাখবে” । - ফাদার বাবলু কোড়াইয়া