গুজরাতের আমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ওড়ার পরেই ভেঙে পড়ল এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী বিমান!
আজ ১২ জুন ২০২৫, গুজরাতের আমদাবাদ বিমানবন্দরের কাছে ভেঙে পড়ল এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রীবাহী বিমান। দেশের অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, বিমানটিতে মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২৩২ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। বিমানের দুই পাইলটের নাম ক্যাপ্টেন সুমিত সবরওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ছিলেন ক্লাইভ কুন্দর।
এআই ১৭১ নম্বরের এই বিমানটি ভারতীয় সময় দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে আমদাবাদে বিমানবন্দর থেকে ওড়ে। সেটি ব্রিটেনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরে উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। ওড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই লোকালয়ের মধ্যে বিমানটি ভেঙে পড়ে।
এটি বোয়িং সংস্থার বি৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমান ছিল। এই ধরনের একটি বিমানে সর্বোচ্চ ২৯০ থেকে ৩০০ জন যাত্রী থাকতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।
ভেঙে পড়ার পর বিমানটিতে আগুন ধরে যাওয়ায় ঘটনাস্থলে দমকলের অন্তত সাতটি ইঞ্জিন পৌঁছে যায়। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ৩০টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিমানের ভিতর এখনও অনেকে আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বিমানটি ওড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই আহমেদাবাদের মেঘানিনগরের বিজে মেডিকেল কলেজের ইউজি হস্টেলের মেসের ছাদে ভেঙে পড়ে। ফলে সেটি বেশি উচ্চতায় পৌঁছোতে পারেনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী রামমোহন নায়ডুর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গুজরাত সরকারকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন।
সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “অহমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় আমি শোকাহত। আমি প্রশাসনিক আধিকারিকদের দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছি। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আহতদের চিকিৎসা করারও নির্দেশ দিয়েছি।”
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গ্রিন করিডর করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।“ শোকপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি লেখেন, ‘‘আমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনায় আমি গভীর ভাবে শোকাহত।’’
সূত্রের খবর ভেঙে পড়ার আগে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-কে বিপদবার্তা (মে’ডে কল) পাঠানো হয়েছিল। পাইলটের কাছ থেকে বিপদবার্তা পেয়ে এটিসি যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু আর যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি।
তবে, আহমেদাবাদের এই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় এক যাত্রী প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আহমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার জিএ মালিক। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাতে তিনি জানান, ১১এ আসনের ওই যাত্রী হাসপাতালে ভর্তি, বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন। যাত্রী তালিকা ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, ওই যাত্রীর নাম বিশ্বকুমার রমেশ।
রেডিও ভেরিতাস এশিয়ার পক্ষ থেকে গুজরাতের আমদাবাদ বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী বিমানে নিহত সকলের আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।
প্রতিবেদন তেরেসা রোজারিও, সূত্র ইন্টারনেট সৌজন্যে