আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পোপ ফ্রান্সিসের মঙ্গোলিয়া সফর
পোপ ফ্রান্সিস আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ পযর্ন্ত মঙ্গোলিয়া সফর করবেন। পোপ তাঁর মঙ্গোলিয়া সফরের মূলসুর হিসেবে বেছে নিয়েছেন “একসঙ্গে আশান্বিত।”
ভাটিকানের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে যে, পোপ রাজধানী উলানবাটোর পৌঁছে প্রথমদিন বিশ্রাম নিবেন এবং ২ সেপ্টেম্বর তাঁকে স্বাগত জানানো হবে চেঙ্গিস খাঁ স্মৃতি সৌধ চত্বরে। তিনি খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করবেন হকি স্টেডিয়ামে।
এছাড়াও পোপ সেপ্টেম্বর ৪ রাজধানীর উত্তরপ্রান্তে দরিদ্রদের জন্য একটা আশ্রম উদ্বোধন করবেন। এই ভবনটি একসময় সেন্ট পৌল দ্যা চারট্রিস সিস্টার সম্প্রদায় কর্তৃক পরিচালিত একটি বিদ্যালয় ছিলো। সরকারি কর্মকর্তা ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে একটি সংলাপ বৈঠকের কথাও বার্তায় বলা হয়েছে।
পোপ ফ্রান্সিস ৩১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে মঙ্গোলিয়ার উদ্দেশ্যে রোম ত্যাগ করবেন এবং প্রায় ১০ ঘন্টা ভ্রমন শেষে ১ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রাজধানী উলানবাটোর গিয়ে পৌঁছাবেন।
পোপের ব্যস্ত সময় শুরু হবে ২ সেপ্টেম্বর থেকে। ২ তারিখ সকালে প্রেসিডেন্ট উখনাগিন খুরেলসুখ, প্রধানমন্ত্রী লুভসানামস্রাইন ওয়েউন-এরদেন , সরকারি কর্মকর্তা ও বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে রাষ্টীয় ভবনে বৈঠক করবেন। পরের দিন ৩ তারিখে পোপ হুন থিয়েটার কেন্দ্রে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
রাষ্টীয়ভাবে নাস্তিকতা শিথিল করার পর, এখন মঙ্গোলিয়ায় ধর্মীয় সুবাতাস বইছে। এখন দেশের প্রায় অর্ধেক জনগণ বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী এবং মুসলিমদের সংখ্যাও কম নয়।
মঙ্গোলিয়া রাশিয়া ও চীনের সীমান্ত দিয়ে ঘেরাও একটি বিশাল দেশ। মোট আয়তন ৬ লাখ ৪ হাজার বর্গ মাইল। লোকসংখ্যা ৩৩ লক্ষ্য- যার মধ্যে ৫৩% তান্ত্রিক বৌদ্ধ, ৩৯% নাস্তিক, ৩% মুসলিম, ৩% শ্যামান এবং ২% হলো খ্রিস্টান।
২০২০ খ্রিস্টাব্দের তথ্য মতে খ্রিস্টানের সংখ্যা ৪২,৮৫৯ জন। উলানবাটোরের কার্ডিনাল জর্জিও মারেংগো’র তথ্য ও হিসাব মতে, ক্যাথলিকদের সংখ্যা মাত্র ১,৪৫০জন। এখানে রয়েছে প্রটেস্টাইন, অর্থোডক্স খ্রিস্টান ও মরমনস খ্রিস্টান সম্প্রদায়।
মঙ্গোলিয়ায় ধর্মীয় বাধ্যবাদকতা ওঠে যাওয়ায় ৩০ বছর পর চার্চ তার কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে পেরেছে। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে মঙ্গোলিয়া বিপ্লবের পর ক্যাথলিক মিশনারিগণ মঙ্গোলিয়া ফিরে আসেন এবং চার্চের প্রতিষ্ঠানগুলো পুন:নির্মাণ করে।
এরপর ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে ভাটিকানের প্রতিনিধি উলানবাটোর আসেন। ভাটিকানের সঙ্গে মঙ্গোলিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে।
পোপ দ্বিতীয় জন পৌল মঙ্গোলিয়া সফরের সিদ্ধান্ত নিলেও পরে পার্শবর্তী দেশের নানা রাজনৈতিক টানা পোড়নে তিনি সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। বর্তমানে গোটা মঙ্গোলিয়া দেশে রয়েছে মোট ৬টি সীমিত আকারের ধর্মপল্লী। পোপ ফ্রান্সিসের সফরই হবে কোনো পোপের প্রথম মঙ্গোলিয়া সফর। - ফাদার সুনীল রোজারিও