পোপ তরুণদের উদ্দেশে এই বড়দিনে কারও সঙ্গে শান্তি স্থাপন করতে আহ্বান জানিয়েছেন
পোপ লিও ইতালিয়ান ক্যাথলিক অ্যাকশন সংগঠনের সাথে যুক্ত তরুণদের বড়দিনের আগে তাদের কাছের কোনো মানুষের সঙ্গে শান্তি স্থাপন করার জন্য উৎসাহ প্রদান করেন। তিনি বলেন, দোকান থেকে কেনা যে কোনো উপহারের চেয়েও শান্তি অনেক বেশি মূল্যবান।
শুক্রবার ওই সংগঠনের সদস্য ও তাদের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি বলেন,
“সংঘাতে ক্ষতবিক্ষত দেশগুলোর জন্য আমরা সবাই এই শান্তি কামনা করি। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সম্মান শুরু হয় আমাদের দৈনন্দিন সম্পর্ক থেকে—ঘর, ধর্মপল্লীতে, স্কুলের সহপাঠীদের সঙ্গে অথবা খেলাধুলার মাঠে আমরা যে আচরণ ও কথপোকথন করি তার মধ্যে দিয়ে ।”
পোপ জোর দিয়ে বলেন যে খ্রীষ্টের আগমন—যাঁকে ইশাইয়া গ্রন্থে “শান্তির রাজপুত্র” বলা হয়েছে—এই শব্দটির প্রকৃত অর্থ শান্তি কেবল যুদ্ধ নয়, বরং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে গড়ে ওঠা বন্ধুত্বের সম্পর্কের মধ্যে নিহিত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শান্তি হলো এমন এক “উপহার, যা প্রকৃত অর্থে কেবল হৃদয়ের মধ্যেই অনুভব করা যায়।” পাশাপাশি তিনি এও বলেন যে, এই শান্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই হলো “ক্যাথলিক অ্যাকশন”-এর প্রধান দায়িত্ব, কারণ এটি এমন এক কাজ যা আমাদের বিশ্ব পরিত্রাতা যীশুর সাক্ষী করে তোলে।
শান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার শক্তি পাওয়ার জন্য গোশালার সামনে প্রার্থনা করুন।
পোপ তাঁর উপদেশে জোর দিয়ে বলেন, বাড়ি, স্কুল ও ধর্মপল্লীতে স্থাপিত শিশু যীশুর গোশালায় উপস্থিত বিভিন্ন চরিত্রের দিকে তাকালে তরুণরা বুঝতে পারবে যে, “আমাদের উদ্ধার করার জন্য যিনি মানুষ হয়ে জন্ম নিয়েছেন সেই প্রভুর চারপাশে সবার জন্যই জায়গা রয়েছে!”
“সবার জন্য জায়গা রয়েছে”—এটিই ক্যাথলিক অ্যাকশনের যুব গোষ্ঠীগুলোর ২০২৫ সালের মূল ভাবনা। পোপ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি শিশু, কিশোর, তরুণ ও প্রবীণ—সবার জন্যই জায়গা রয়েছে প্রভু যীশুর পবিত্র হৃদয়ে।
“ঈশ্বরের পুত্র যখন এই জগতে আগমন করেন, তখন তিনি কোনো ঘরে আশ্রয় পাননি বরং তিনি আমাদের হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়েন, ঠিক যেমন তিনি নিজ হৃদয়ে ভালোবাসার সহিত সবাইকে আহ্বান জানান ।”
এরপর পোপ লিও চতুর্দশ ক্যাথলিক অ্যাকশনের তরুণদের আহ্বান জানান, শিশু যীশুর গোশালার সামনে প্রার্থনা করার সময় যেন তারা দেবদূতদের মতো হতে চায়—যারা সবার কাছে ঈশ্বরের মহিমা ও শান্তির বার্তা ঘোষণা করেছিল।
পোপ উল্লেখ করেন, “এই শান্তি হলো সদিচ্ছাসম্পন্ন প্রতিটি মানুষের অঙ্গীকার—বিশেষ করে আমাদের, খ্রিস্টানদের—যাদের কেবল ভালো হওয়ার জন্য নয়, বরং প্রতিনিয়ত ভালো থেকে আরও ভালো হয়ে ওঠার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।”
এই প্রসঙ্গে তিনি ক্যাথলিক অ্যাকশনের সদস্য সাধু পিয়ের জর্জিও ফ্রাসাতি এবং সাধু কার্লো আকুতিসের আদর্শ অনুসরণ করতে সকল তরুণদের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “তাদের মতো করে কাজ করলে তোমাদের শান্তির বার্তা ঘোষণা হবে দীপ্তিময়; কারণ যীশুর সান্নিধ্যে তোমরা হয়ে উঠবে প্রকৃত অর্থে স্বাধীন ও সুখী এবং প্রস্তুত থাকবে প্রতিবেশীর প্রতি—বিশেষ করে যাদের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে—তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিতে”।