বাংলাদেশ ন্যায় ও শান্তিবিষয়ক বিশপীয় কমিশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল “লাউদাতো সি” তীর্থ

বাংলাদেশ ন্যায় ও শান্তিবিষয়ক বিশপীয় কমিশনের আয়োজনে সিসিডিবি ক্লাইমেট সেন্টারে অনুষ্ঠিত হল “লাউদাতো সি” তীর্থ

গত ৮ মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বাংলাদেশ ন্যায় ও শান্তিবিষয়ক বিশপীয় কমিশনের আয়োজনে শ্রীপুর সিসিডিবি ক্লাইমেট সেন্টারে অনুষ্ঠিত হল “লাউদাতো সি” তীর্থ উৎসব।

এই তীর্থের মূলসুর ছিল, “ঈশ্বরের সৃস্ট প্রকৃতিতে একসাথে পথচলা ও তার যত্ন নেওয়া”। এই তীর্থে বাংলাদেশের আটটি ধর্মপ্রদেশের ন্যায় ও শান্তিবিষয়ক কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এতে বিশপ, ফাদার, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সিস্টার এবং খ্রিস্টভক্তগন মিলে ৩০জন অংশগ্রহনকারী অংশগ্রহন করেন।

এই তপস্যাকালীন তীর্থের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল, প্রকৃতি ও পরিবেশের যত্ন নেওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনে আমাদের করণীয় কী সেই বিষয়ে সচেতন হওয়া। মূলত: একটা অভিজ্ঞতা করা, যেখানে ঈশ্বর, প্রতিবেশী ও  প্রকৃতি এক সাথে সম্পর্ক যুক্ত বিষয়গুলো যেন আমরা আমাদের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করতে পারি।

ন্যায় ও শান্তিবিষয়ক বিশপীয় কমিশনের সভাপতি বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, “পোপ ফ্রান্সিস ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের কিছু আগে থেকে “লাউদাত্যো সি” এই দলিলের মধ্যদিয়ে আমাদের কাছে প্রকাশ করেছেন যে, মানুষকে যেমন আমরা ভালোবাসবো তেমনিভাবে পরিবেশকে ও যেন আমরা ভালোবাসি।”

তিনি আরও বলেন, “ধরিত্রী যে আমাদের আবাসগৃহ আমরা যেন তার যত্ন নিতে পারি। কারন  পৃথিবীতে পরিবেশ পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে নির্বিচারে গাছ কাটাখনিজ পদার্থ  উত্তোলন, বিভিন্ন পেট্রল জাতীয় দ্রব্য ব্যবহারের মধ্যদিয়ে আমাদের পরিবেশ মারাত্নক ক্ষতির সন্মুখিন  হচ্ছে। আমরা হয়ত এ  ক্ষতির সম্পুর্ন নিরাময় করতে পারবো না, তবে আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে বেশি বেশি গাছ লাগিয়ে পরিবেশকে বিশুদ্ধ রাখতে পারি।”

আমরা গাছ লাগিয়ে একটি আদর্শ স্থাপন করতে পারি এবং দেশের যত্ন করতে পারি। আর এর মধ্যদিয়ে আমরা পবিরেশকে বিপর্যয়ের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবো। আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ সুস্থ থাকলে আমরা সুস্থ থাকতে পারবে”, বলেন বিশপ জের্ভাস রোজারিও ।

কমিশনের সেক্রেটারি ফাদার লিটন হিউবাট গমেজ সিএসসি বলেন, “প্রকৃতি পরিবেশ ও জীবন জীবিকা সুরক্ষার্থে আমাদের পুন্যপিতা পোপ ফ্রান্সিসের সার্বজনীন পত্র “লাউদ্যাত্যে সি”  পত্রের উপর ভিত্তি করে আমরা আজকে ধ্যান-প্রার্থনা, অনুভুতি সহভাগিতা এবং ক্রুশের পথে মধ্যদিয়ে আমাদের নিজেদের জীবন অভিজ্ঞতা সহভাগিতা করেছি।”

পুন্য পিতা পোপ ফ্রান্সিস বলেছেনআমাদের জীবনে তিনটি সর্ম্পকের উপর ভিত্তি করে আমাদের জীবন চলমান আর তা হলোঈশ্বরের সাথে, মানুষে সাথে এবং প্রকৃতি এবং সৃষ্টির সাথে তাই প্রকৃতির যত্ন নেওয়া আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব,” বলেন ফাদার লিটন গমেজ, সিএসসি।

এই কমিশনের কার্যক্রমকে মূলত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে মণ্ডলীতে সেবা দিয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে আধ্যাত্নিক সমৃদ্ধিমূলক সেবা, মানুষের জীবনধারা পরিবর্তনমূলক সেবা এবং গণমঙ্গল নীতিমালামূলক সেবা।

এই তীর্থে অংশগ্রহনকারী মিস. অনিতা মার্গারেট রোজারিও বলেন, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাটি, পানি ও বায়ুর যত্ন নিব এবং পরিবেশ রক্ষায় আরো যত্নশীল হবো। আমাদের আগামী প্রযন্মের জন্য একটি নিরাপদ পৃথিবী রেখে যেতে হলে আমাদের সকলকে এখন থেকেই পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখতে হবে।”

অংশগ্রহনকারী এডিসন বাড়ৈ তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “আমি পরিবেশ রক্ষায় কাজ করব এবং আমার বন্ধু মহলদের উৎসাহিত করব প্রকৃতির যত্ন নেওয়ার জন্য। ঈশ্বর প্রকৃতি সৃস্টি করেছেন আর আমাদের দায়িত্ব হলো এই সুস্টিকে রক্ষা করা।”

দিনব্যাপী এই তপস্যাকালীন “লাউদাতো সি” তীর্থের কর্মসূচির মধ্যে ছিল, প্রকৃতির  মধ্যে পবিএ ক্রুশের পথ করা, প্রার্থনা করা এবং জীবন ভিক্তিক অনুধ্যান সহভাগিতা করা।

ন্যায় ও শান্তিবিষয়ক বিশপীয় কমিশনের একটি গুরুত্বপুন্য পালকীয় কাজ হলো, মণ্ডলীর সবার প্রতি বিশেষভাবে দীনতম ভাইবোনদের প্রতি দয়া, ন্যায্যতা ও শান্তি এবং মানব উন্নয়নের জন্য সেবা প্রদান করা। - আরভিএ সংবাদ