রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের লুর্দের রাণী মারীয়া ধর্মপল্লীতে উদযাপিত হলো মা মারীয়ার মহাপর্বোৎসব

বনপাড়া লুর্দের রাণী মারীয়া ধর্মপল্লীতে উদযাপিত হলো মা মারীয়ার মহাপর্বোৎসব

গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বনপাড়া লুর্দের রাণী মারীয়া ধর্মপল্লীতে উদযাপিত হলো মা মারীয়ার মহাপর্বোৎসব ।

এই পর্ব দিবসকে কেন্দ্র করে খ্রিস্টভক্তদের আধ্যাত্নিক প্রস্তুতি স্বরুপ নয় দিনের নভেনা প্রার্থনা, পবিত্র খ্রিস্টযাগ, পাপস্বীকার সংস্কার, ও মানত দানের মাধ্যমে ধর্মপল্লীর বহুসংখ্যক মারীয়া ভক্ত বিশ^াসী এই মহাপর্ব দিবসে যোগদান করে। 

নভেনার শেষ দিন ৮ ফেব্রুয়ারী বিকালে অনুষ্ঠিত হয় পবিত্র ক্রুশের পথের মধ্য দিয়ে যীশুর সাথে যাত্রা। ক্রুশের পথের পর খ্রিস্টযাগ এবং মা- মারীয়ার মূর্তি নিয়ে রোজারিমালা প্রার্থনা ও আলোক শোভাযাত্রা।

এই মহাপর্ব দিবসের খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও সহ তাঁর সহার্পিত খ্রিস্টযাগে উপস্থিত ছিলেন ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার দিলীপ, সহকারি পাল-পুরোহিতগণ সহ আরো ১১ জন ফাদার, ১৪ জন সিস্টার ও প্রায় ৩,০০০ মত খ্রিস্টভক্ত পর্বীয় খ্রিস্টযাগে উপস্থিত ছিলেন।

খ্রিস্টযাগের উপদেশে বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, “ধর্মপল্লীর প্রতিপালিকা লূর্দের রাণী মা মারিয়ার পর্বদিনে আমি আসতে পেরে নিজেই অনেক খুশি হয়েছি। আজকের এই পর্বীয় খ্রিস্টযাগে অনেকেই যোগদান করেছেন এবং মা মারিয়ার মধ্যস্থতায় প্রার্থনা করেছেন যা আমাদের বিশ্বাসের চিহ্ন। আমি মনে করি লূর্দের রাণী মারিয়া’র মধ্যস্থতায়  প্রার্থনার মধ্যদিয়ে, তার সহায়তার মধ্যদিয়ে সকল খ্রিস্টভক্তদের যারা বিশেষভাবে এ পর্ব করতে এসেছেন এবং মানত করেছেন যেন তাদের মনের ইচ্ছা পূরণ করেন এবং সৎ পথে পরিচালনা করেন।”

এই পর্বদিবসে যোগদানকারী মারীয়া ভক্ত মিসেস ডালিয়া বলেন, এই পার্বণে আসার উদ্দেশ্য হলো-আমার স্বামী, সন্তান ও আত্মীয় পরিস্বজন বন্ধুবান্ধব যেন ভালো থাকে, সুস্থ্য থাকে। এ পার্বণে যেন প্রতিনিয়ত দূর-দুরান্ত থেকে মানুষ আসে এবং এই জায়গাটি যেন একটি তীর্থভূমি হয়ে উঠে।

মিসেস সাগরী গমেজ তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “আমি মথুরাপুর ধর্মপল্লী থেকে এসেছি। আমার মানত ছিল। আমার পরিবারের শান্তি, সারা বিশে^র শান্তি সব কিছুর জন্য আমি এখানে প্রার্থনা করেছি। আজকে এখানে এসে অনেক ভালো লেগেছে কারণ এতো মানুষের সমাগম অনুষ্ঠানকে আরো প্রার্থনাপূর্ণ ও অর্থপূর্ণ করে তুলেছে।”

এই পর্বে অংশগ্রহনকারী বনপাড়া ধর্মপল্লীর পালকীয় পরিষদের সদস্যা মিসেস কুসুম কস্তা তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন বলেন, “আমি আমার জীবনে মায়ের অনেক কৃপা আশিষ লাভ করেছি। আমার ছেলে যখন অনেক অসুস্থ্য ছিল আমি মায়ের কাছে অনেক আকুতি মিনতি করেছি। মা আমার আশা পূরণ করেছে। তাই আমার সমস্ত বিশ^াস মায়ের কাছে রাখি তিনি আমার সমস্ত আশা পূর্ণ করেছেন।”

উল্লেখ্য যে, মা মারীয়ার কৃপা, অনুগ্রহ ও আশীর্বাদ লাভের জন্য ফ্রান্সের লূর্দ নগর থেকে বিশেষ পাথর আনা হয়েছে যা স্পর্শ করে অনেক ভক্ত বিশ^াসী আশ্চর্য্যজনকভাবে মা মারীয়ার কৃপা আশীর্বাদ লাভ করছে।

বনপাড়া ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার দিলীপ এস. কস্তা সবাইকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, “মা মারিয়া আমাদের অনেকভাবে সহায়তা দিয়ে থাকেন রক্ষা করেন সেইজন্য মা মারিয়ার প্রতি আমাদের ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। মায়ের মধ্যদিয়ে আমাদের ধর্মপল্লী তথা বিশ্বমণ্ডলির শান্তি বিরাজ করুক সেই প্রার্থনা করি আজকের এই পর্ব দিনে। সকলে ভাল থাকবেন এই প্রত্যাশা করি।”

পবিত্র খ্রিস্টযাগের শেষ আশির্বাদের আগে পর্বীয় বিস্কুট আশির্বাদ করেন ও পরে রোগীদের নিরাময় কামনা করে প্রার্থনা করেন। - লর্ড রোজারিও